একটি বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, হেফাজতে ইসলাম ভেঙে যাচ্ছে। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলামের নতুন আমীর হয়েছেন জুনায়েদ বাবুনগরী আর নতুন মহাসচিব হয়েছেন নূর হোসেন কাসেমীকে। তবে এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানী ও তাঁর অনুসারীরা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে হেফাজতে ইসলামের প্রতি আগ্রহের কারণ ছিলো ২০১৩ সালের ৫মে রাজধানীর শাপলা চত্তরে যে শোডাউন করেছে তাতে করে রাজনৈতিক দলগুলো মনে করছে যে এখানে বিশাল একটা লোকবল আছে। তারা যদি আমাদের সাথে থাকে তাহলে ভালো হবে। সেই বিবেচনায় তখন রাজনৈতিক দলগুলো হেফাজতকে নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ পেছনে থেকে আল্লামা শফীকে তাদের দিকে টেনে আনে। এখন ভাগ করার ফলে অখন্ড হেফাজতের শক্তি নষ্ট হয়ে যাবে।
এখন বিভক্ত হেফাজতের আগের মত শক্তি ও গ্রহণযোগ্যতা থাকছে না। কাজেই যে আশা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত বাবুনগরী আর নূর হোসেন কাসেমীকে মহাসচিব বানিয়েছে সেই আশা পূরণ হবে না।
বাবুনগরীর একটা শক্তিশালী গ্রুপ আছে তবে আল্লামা শফী হলো হেফাজতের অবিসংবাদিত নেতা। কাজেই আল্লামা শফীর অনুসারীদের একটা বড় অংশই তার ছেলে এবং পরিবারের সদস্যদের দিকে ঝুকছে, ফলে এই হেফাজতের অখন্ড শক্তি থাকছে না। এতে করে হেফাজত ভাঙলে আওয়ামী লীগের ৩ ধরনের লাভ হবে।
প্রথমত, হেফাজতে ইসলাম হুমকি হবে না: সরকারের অগ্রগতিতে কোনো বাধা আসবে না এই সংগঠনের পক্ষ থেকে।
দ্বিতীয়ত, একটা অংশের হেফাজত আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবে এবং সেই অংশটাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে কাছে রাখতে পারবে।
তৃতীয়ত, বাবুনগরী এবং জামায়াত খেলাফতের যে পক্ষ সেই পক্ষটা চিহ্নিত হয়ে গেলো যে এরা জামায়াতের পক্ষ। কাজেই তারা যদি সরকারের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নেয় বা বক্তব্য রাখে সেটাও গ্রহণযোগ্য হবে না।