মোখলেসুর রহমান

কফি চাষে সফল রংপুরের মোখলেসুর

সারা দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে এক কাপ চা কিংবা কফি শরীর ও মনকে নিমিষেই তরতাজা করে তোলে। আর সেই কফি চাষ করেছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার গোয়ালবাড়ী এলাকার যুবক মোখলেসুর রহমান।

রংপুর বিভাগীয় শহর থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দূরেই তারাগঞ্জ উপজেলা শহর। উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের গোয়ালবাড়ী গ্রামেই মোখলেসুর রহমানের কফির বাগানটি।

মোখলেসুর রহমান ২০১৭ সালে বেড়াতে গিয়েছিলেন কক্সবাজারে। সেখানে পরিচয় হয় বেসরকারি এগ্রো বেইজড কোম্পানির এক বড় কর্মকর্তার সঙ্গে। পরিচয়ের একপর্যায়ে কথা হয় কফি চাষ নিয়ে। কফি একটি লাভজনক ফসল এবং দেশে কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

ওই কর্মকর্তার এমন কথায় তার মধ্যে আগ্রহের সৃষ্টি হয়। আর এ আগ্রহ থেকেই কফির চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এর পর ২৮ শতাংশ জমিতে ৮০০টি কফির চারাগাছ লাগিয়ে বাগান করেন মোখলেসুর। বর্তমানে সেই চারাগাছই পূর্ণতা পেয়েছে এবং তাতে ফল ধরেছে। কফির সফল চার্ষের বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ওই কফিচাষি মোখলেসুর জানান, মূলত শখের বশেই তিনি এ কফিবাগান করেছেন। এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এটি সম্প্রসারণ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কফি বাগানের জন্য আরও দেড় একর জমি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিশ্বে কফির দুটি জাত রয়েছে একটি অ্যারাবিকা ও আরেকটি রুবাস্টা।

তিনি অ্যারাবিকা জাতের কফি চাষ করেছেন। এ জাতের কফি খুবেই সুস্বাদু। রুবাস্টা জাতের কফির ফলন বেশি হলেও স্বাদে ও মানে অ্যারাবিকা জাতের কফির মতো নয়। এ কারণে রুবাস্টা জাতের কফির চাহিদা কম ও দামও কম।

তিনি চাষিদের উদ্দেশ্যে বলেন, কফি চাষে লাভবান হতে হলে অবশ্যই অ্যারাবিকা জাতের কফি চাষ করতে হবে। চারা রোপণের পর মাত্র ১৮ মাসে গাছে ফল আসতে শুরু করে। গত বছর ওই বাগান থেকে ছয় কেজি কফি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত তিন সপ্তাহ ধরে ফল সংগ্রহের কাজ চলছে। এরই মধ্যে বাগান থেকে ১০০ কেজি কফি সংগ্রহ করা হয়েছে এবং আরও ১৫০ কেজি কফি সংগ্রহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশে চা চাষের ইতিহাস সুদীর্ঘ হলেও কফি চাষ খুব বেশি দিনের নয়। গত কয়েক বছরে উত্তরাঞ্চলে বেশ কিছু জেলায় কফি চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার উম্মে তাবাসসুম বলেন, এর আগে উপজেলায় কখনও কেউ এ ধরনের ফসল চাষ করেননি। তাই কফি চাষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। কিন্তু চাষি মোখলেসুর যখন নিজ উদ্যোগে কফি বাগান করেন, তখন তাকে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেয়া হয়।

শেয়ার করুন: