পাঠ্যবই ছাপা-বাঁধাই

পাঠ্যবই ছাপা-বাঁধাইয়ে ব্যস্ত মুদ্রণপাড়া

যথাসময়ে ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিনা মূল্যে পাঠ্যবই তুলে দিতে জোর চেষ্টা চলছে। তাই বই ছাপা ও বাঁধাইয়ে ব্যস্ত এখন রাজধানীর মুদ্রণপাড়া। এবার ১৫১টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩৫ কোটি বই ছাপা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো বই জেলা-উপজেলা পর্যায় পাঠানো সম্ভব হয়নি।

চলতি বছর মাধ্যমিকে চার ধরনের মোট ১১টি বইয়ে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। এগুলো হল : ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ইংরেজি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বসভ্যতার ইতিহাস। এই তিন বিষয়ের আছে মোট আটটি বই। এ ছাড়া ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির আনন্দপাঠ বা দ্রুতপঠন বইগুলো নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। মাধ্যমিকের বইয়ে এবার নতুন সংযোজন হচ্ছে প্রত্যেকটির কভার পেজের ভেতর দুই অংশে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ওপর বাছাইকৃত ৭২টি চিত্র।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, নানা কারণে এ বছর বইয়ের মুদ্রণ কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে মাধ্যমিকের প্রায় আড়াই কোটি এবং প্রাথমিক স্তরে বেশ কিছু বই ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে বইগুলো জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো শুরু হবে।

সূত্র জানায়, মুদ্রাকরদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বইয়ের মুদ্রণকাজ শেষ হবে না। চুক্তি অনুযায়ী বেশকিছু প্রতিষ্ঠান মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত বই সরবরাহের সময় পাচ্ছে। তাছাড়া কভার অনুমোদনে জটিলতা ও কাগজের দাম বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কারণে প্রত্যাশিত পর্যায়ে মুদ্রণের কাজ আগেভাগে শুরু করা যায়নি। এ কারণে পিছিয়ে আছে মুদ্রণকাজ। তবে এনসিটিবির চেয়ারম্যান বুধবার রাতে জানিয়েছেন, মুদ্রাকরদের বুঝিয়ে হলেও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে আনা হবে।

২০১০ সাল থেকে সরকার নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছে। সেই থেকে প্রতিবছর ১ জানুয়ারি উৎসবের মাধ্যমে শিশুদের হাতে বই তুলে দেয়া হয়। উৎসবের নাম দেয়া হয়েছে পাঠ্যপুস্তক উৎসব।

মহামারীর কারণে এ বছর এ উৎসব হবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, করোনা সংক্রমণের কারণে ১ জানুয়ারি কেন্দ্রীয়ভাবে পাঠ্যবই উৎসব পালন করা হবে না। তবে স্কুলে স্কুলে এবং শিশুদের কাছে বই যথাসময়ে পৌঁছে দেয়া হবে। মুদ্রণকারীরা জানান, করোনার কারণে এ বছর ছাপার কাঁচামাল দেশে সঠিক সময়ে পৌঁছেনি। আবার মুদ্রণ শ্রমিকদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণেও কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। এতসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছানোর সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, পাঠ্যবই মুদ্রণকাজ সময়মতো শেষ করতে তদারকি ব্যবস্থা চালু রেখেছে এনসিটিবি। এনসিটিবির কর্মকর্তারা প্রেসে প্রেসে গিয়ে মুদ্রণ কার্যক্রম পরিদর্শন ও তদারকি করছেন। প্রাথমিকের বই ব্যুরো ভেরিটাস এবং মাধ্যমিকের বই ইনডিপেনডেন্ট ইনস্পেকশন নামে দুটি প্রতিষ্ঠান তদারকি করছে। এর মধ্যে প্রথম প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে পরিদর্শনের নামে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে জানতে সংস্থাটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন: