বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ১২ ঘণ্টা পর একজনকে জীবিত উদ্ধার!

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবির ১২ ঘণ্টা পর একজনকে জীবিত উদ্ধার!

রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চডুবির ১২ ঘণ্টার পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় এ লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে।

রাত ১০টার দিকে লঞ্চটি উদ্ধারের সময় এই লোককে ভেসে উঠতে দেখে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এরপর দ্রুত তাকে উদ্ধার করে পাশের একটি নৌকায় তোলা হয়। এবং লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে তার দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়। তার ঠোঁঠের কোনে হালকা রক্তের আভা দেখা গেছে।

উদ্ধার ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে লঞ্চটি উদ্ধারের সময় এই লোকটি ভেসে উঠে। লঞ্চের এককোনা ভেসে উঠলেই তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু লঞ্চের টিউবটি ফেটে যাওয়ায় লঞ্চটি আবার তলিয়ে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। ডুবুরিরা তাকে লাইফ জ্যাকেটে ঢেকে এবং শরীর মেসেজ করে তার শরীর গরম করার চেষ্টা করেন। এরপর ওই ব্যক্তি চোখ মেলে তাকান।

কোস্টগার্ড ও নেভির কর্মকর্তারা জানান, তারা যখন উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিটিকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিলেন তিনি চোখের ইশারায় কথার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে দীর্ঘ সময় পানির নিচে আটকে থাকায় তার শরীরের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল। পানির নিচে তলিয়ে গেলেও এ ব্যক্তি কীভাবে বেঁচে গেলেন তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি যেখানে আটকা পড়েছিলেন সেখানে হয়তো সেভাবে পানি প্রবেশ করেনি। আজ যখন টিউবের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়ায় লঞ্চটি তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল তখন লঞ্চটি সামান্য ভেসে ওঠার পর ওই ব্যক্তি নিজের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসেন এবং উদ্ধার কর্মীরা তাকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে নৌকায় তুলেন।

এদিকে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, লঞ্চডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জন শিশু ৮ নারী ও ২০ পুরুষ। বেলা সোয়া ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান গোলাম সাদেক জানান, ময়ূর–২ নামের একটি লঞ্চ সদরঘাট লালপট্টি থেকে চাঁদপুরের দিকে যাচ্ছিল। ওই লঞ্চটি মর্নিং বার্ডকে ধাক্কা দেয়। এতে মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি ডুবে যায়।

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন জানান, ধাক্কা দেওয়া লঞ্চ ময়ূর–২ জব্দ করা হয়েছে। তবে লঞ্চের চালক পালিয়ে গেছেন।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ জামাল জানান, উদ্ধার করা লাশের মধ্যে পুরুষ ২০ জন। নারী ৮ জন ও শিশু ৪টি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামের একটি লঞ্চের ধাক্কায় কমপক্ষে ৫০ যাত্রী নিয়ে ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ রুটের মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চটি থেকে কয়েকজন যাত্রী সাঁতরে পাড়ে উঠলেও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

শেয়ার করুন: