চা উৎপাদন

বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন

চা উৎপাদনে ১৬৬ বছরের রেকর্ড ভাঙলো বাংলাদেশ। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২০১৯ সালে ৯৬ দশমিক ০৭ (৯৬.০৭) মিলিয়ন কেজি (৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি) চা উৎপাদন করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক কোটি ৬০ লাখ কেজি চা বেশি উৎপাদিত হয়েছে।

সোমবার বাংলাদেশ চা বোর্ডের পক্ষ থেকে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

২০১৮ সালে দেশে ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। অর্থাৎ গত বছর চায়ের উৎপাদন বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন (এক কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার) কেজি। ২০১৮ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ দশমিক তিন মিলিয়ন কেজি। এর আগে ২০১৬ সালে সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ৮৫ দশমিক শূন্য পাঁচ মিলিয়ন কেজি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপপরিচালক মো. মুনির আহমদ বলেছেন, ২০১৯ সালে ৯৬ দশমিক ০৭ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। এর আগে ৮৫ মিলিয়ন কেজির ওপর কখনও যেতে পারেনি। চা উৎপাদনে সর্বকালের রেকর্ড করল বাংলাদেশ। এ আমাদের অনেক বড় রেকর্ড।

গত বছরের নভেম্বর মাসেই চা উৎপাদনে রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৮ কোটি ৫০ লাখের অধিক কেজি চা উৎপাদিত হয়, তখনই ২০১৬ সালের ৮ কোটি ৫০ লাখ কেজি রেকর্ড উৎপাদনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে মুনরি আহমদ বলেন, ২০১৯ সালে নভেম্বরেই মোট উৎপাদনের ৯৫ শতাংশ চা উৎপন্ন হওয়ায় আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম যে, রেকর্ড করবে বাংলাদেশে। তাই হলো। এখন আমরা রফতানি করতে পারব।

চা শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে চায়ের চাহিদা বছরে ৯ কোটি কেজি। ২০১০ সাল থেকে এই চাহিদা পূরণ করতে চা আমদানি শুরু হয়। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ ১ কোটি ১৪ লাখ কেজি চা আমদানি হয়। তবে এখন আমদানি শঙ্কা কেটে গেছে। বাংলাদেশ এখন চা রফতানি করতে পারবে।

চা গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে চা উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। চা বাগানের নামে লিজ নেয়া জমির সঠিক ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, সঠিক মনিটরিং, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা, কমমূল্যে সার-কীটনাশক সরবরাহ ও ক্লোনিং চা গাছ রোপণ করলে উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। চা চাষের জন্য লিজ নিয়ে ভিন্ন খাতে ভূমি ব্যবহার হয়।

১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে প্রথম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা চাষ শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের সময় দেশে চা বাগানের সংখ্যা ছিল ১৫০টি। তখন ৩ কোটি কেজির মতো চা উৎপাদন হতো। বর্তমানে চা বাগানের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৬টিতে।

এর মধ্যে মৌলভীবাজারে রয়েছে ৯২টি চা বাগান। বাকিগুলো হবিগঞ্জে ২৪টি, সিলেটে ১৯টি, চট্টগ্রামে ২২টি, পঞ্চগড়ে সাতটি, রাঙ্গামাটিতে দুটি ও ঠাকুরগাঁওয়ে একটি। এসব বাগানে মোট জমির পরিমাণ ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৯ একর।

শেয়ার করুন: