টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে দলটির দ্বিতীয় শীর্ষপদ সাধারণ সম্পাদকে কে আসছেন, সেই আলোচনাই এখন ঘরে-বাইরে সর্বত্র। আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনে নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে বলেই আভাস দিয়েছে নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো। দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এবারের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দলটির সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন, সেটিই ঘুরে-ফিরে সামনে আসছে। তবে শনিবারের কাউন্সিল অধিবেশনের আগে এটি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, দলের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য জোর তদবির করছেন এ পদে আসীন ওবায়দুল কাদের ছাড়া তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুইজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা। তারা যে যার লাইনে অগ্রসর হচ্ছেন, ‘ওয়ান টু ওয়ান’ আলোচনা করছেন।
কে আসছেন, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একপক্ষ চান, ওবায়দুল কাদেরই থাকুক আর অন্যপক্ষ চান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বা সাংগঠনিক সম্পাদক থেকে নতুন কেউ দায়িত্ব পাক। এ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও নেতাদের বাসায় ঝটিকা বৈঠকে বসছেন দুইপক্ষের নেতারা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এসব নেতার অনুসারীরা বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের পাশাপাশি বৈঠক করছেন। নেতাদের পক্ষে-বিপক্ষের বৈঠকে অংশ নেয়া নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর দু-একজন সদস্য ছাড়া বেশিরভাগই সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তাদের আলোচনার শেষে একটা কথাই বলছেন সবাই, কে হবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সে সিদ্ধান্ত দেবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে যারা আলোচনায় আছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আজমত উল্লাহ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এদিকে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘একটা পদে কোনো পরিবর্তন আসবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের পার্টির সভাপতি। আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া আমরা কেউই অপরিহার্য নই। তিনি এখনও আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যন্ত সবাই তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। এর পরের পদটা কাউন্সিলরদের মাইন্ড সেট করে দেয়। সেটাও তিনি (সভাপতি শেখ হাসিনা) ভালো করে জানেন।’