বানর

সেই বানরটির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর!

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে এক বানরের আক্রমণে এক শিশুর মৃত্যু ও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। গত এক মাস ধরে বানরটি অত্যাচার চালিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে স্থানীয়রা বানরটিকে ধরার জন্য বন বিভাগের দ্বারস্থ হয়। তবে তাতেও সমাধান মেলেনি। মঙ্গলবার সকালে ঘুমের ওষুধ মিশানো ভাত খাইয়ে দিনব্যাপী ধাওয়া করে বিকালে বানরকে ধরার পর উত্তেজিত জনতা ‘গণআদালত’ বসিয়ে বানরটিকে ‘মৃত্যুদণ্ড’ দিয়ে হত্যা করে।

এর আগে বানরটির ভয়ে পুরো এলাকার মানুষ তটস্থ ছিল। গত এক মাস ধরে এই অবস্থা বিরাজ করে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ বানরের আক্রমণে তানিয়া বেগম (৮) নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও পরে সে মারা যায়।

গত এক মাসে বানরটি সেলিম আহমদ (৮), মারুফ আহমদ (১০), বিউটি বেগম (১১) ছাড়াও রোকনপুর, বড়খলা, কাঠালতলী ও গৌড়নগর এলাকার শিশুসহ প্রায় ২৫ জনকে আঁচড়ে-কামড়ে আহত করেছে। আহতদের বেশির ভাগের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে কয়েকটি চা বাগান ও বনাঞ্চল রয়েছে। পাহাড় ও চা বাগানে অনেক বানরের বাস। এরা অনেক সময় খাবারের সন্ধানে দলবলে লোকালয়ে এসে খেতের ফসল খেয়ে কিংবা নষ্ট করে চলে যায়। কিন্তু মানুষের ওপর কখনো আক্রমণ করেনি। কিন্তু গত এক মাস আগে গলায় লাল রঙের রসি বাধা অবস্থায় বানরটি লোকালয়ে এসে তাণ্ডব শুরু করে।

বানরটি হঠাৎ করে বানরটি মানুষের ওপর আক্রমণ করত। ভোরবেলা, দুপুর ও সন্ধ্যায় একা পেলেই লোকজনের ওপর হামলা করেছে। বেশিরভাগ আক্রমণের শিকার হচ্ছে স্কুলগামী শিশুরা। বিভিন্ন সময় বানরটি যেসব শিশুকে আক্রমণ করেছে তাদের অবস্থা গুরুতর।

বানরটির আক্রমণ হতে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন গত বৃহস্পতিবার বড়লেখা উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোনো সমাধান মেলেনি। তবে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা এনামুল হক এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী লোকজনকে বানরটি মেলে ফেলার নির্দেশ দেন।

শেয়ার করুন: