সুপার ওভারও টাই, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

বিশ্বকাপের শিরোপা এখনও ছুয়ে দেখিনি ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডে। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ফেভারিটদের তকম ছিলো স্বাগতিকদের গায়েই। তারই ধারাবাহিকতায় ফাইনালে মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। তবে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

সুপার ওভারে আগে ব্যাট করে ইংল্যান্ড করে ১৫ রান। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ড এর প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। এই রান তাড়া করতে নেমে কোন উইকেট না হারিয়ে ১৫ করে নিউজিল্যান্ড। ফলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।

টস জিতে আগে ব্যাট করে ২৪১ রান করে কিউইরা। মামুলি এই লক্ষ্য তাড়া করেতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৪১ করে ইংল্যান্ড।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই কিউই বোলরা চেপে ধরেন ইংলিস ব্যাটসম্যানদের। দলীয় ২৮ রানেই ম্যাট হেনরির বলে টম ল্যাথামকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যায় জেসন রয়। হেনরি করা অফ স্টাম্পের বলটি যেন জেসন রয়কে খেলতে বাধ্য করেছিলেন তিনি। অনেকটা সেমিফাইনালে রোহিত শর্মাকে আউট করার মতো। আউট হওয়ার আগে কিউই এই ব্যাটসম্যান করেন ২০ বলে ১৭ রান।

এরপর ক্রিজে এসে ৩০ বল মাত্র ৭ রান করে ফিরে যান জো রুট। দুই উইকেট হারিয়ে যখন কিছুইটা চাপে পরে ইংল্যান্ড তখন ইংলিসদের সেই চাপ আরো বাড়িয়ে দেয় কিউই পেসার লোকি ফার্গুসন। তার শিকার জনি বেয়ারস্টো। ফার্গুসনের ব্যাক অব লেংথের অফ সাইডের বাইরের বল অফ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন বেয়ারস্টো। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটসম্যান করেন ৫৫ বলে ৩৬ রান। আর অধিনায়ক এউইন মরগান আউট হয় মাত্র ৯ রান করে।

টপ অর্ডাররা সবাই যখন আসা যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন তখন মাঠে নেমেই ইনিংস বড় করতে শুরু করেন দুই ব্যাটসম্যান স্টোকস-বাটলার। শুরু থেকে এই জুটি ধীর গতিতে রানের চাকা সচল করতে থাকেন। পরে অবশ্য বাটলার ৬০ বলে ৫৯ রান করা ফিরে গেলেও অপরাজিত ছিলেন স্টোকস।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে নিউজিল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড বোলারদের তোপের মুখে পরে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলস। যার ফলে ইনিংসের শুরুটা অনেক বাজে ভাবে হয় কিউইদের। দলীয় ২৯ রানেই ওকসের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে প্যাভিলিয়নে ফিরে যায় মার্টিন গাপটিল। রিভিউ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি এই ওপেনারের। আউট হওয়ার আগে গাপটিল করেন ১৮ বলে ১৯ রান। এরপর ক্রিজে এসে নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা সচল করেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।

মাঠে নেমেই কিউই অধিনায়াক বরাবরের মতো ইনিংস বড় করার সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন স্বাগতিক ইংল্যান্ড তখন ইনিংস বড় করতে ব্যার্থ হন উইলিয়ামসন। দলীয় ১০৩ রানে ৫৩ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় তাকে। রিভিউ নিয়ে কিউই অধিনায়কে প্যাভিলিয়নে পাঠান লিয়াম প্লাঙ্কেট। এদিন দলের জন্য একাই লড়েন ওপেনার হেনরি নিকোলস।

অবশ্য ইনিংস শুরুতে ক্রিস ওকসকের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে আউট হয়েছিলেন তিনি। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন সে বার। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির ইনিংসটি বড় করতে ব্যর্থ হন তিনি। আউট হওয়ার আগে করেন ৭৭ বলে ৫৫ রান। এরপর রস টেলর(১৫), জেমস নিশাম (১৯) ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম (১৬) রান করে সাজঘরে ফিরে গেলে চাপে পরে কিউইরা। তবে শেষের দিকে টম ল্যাথামের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডে বিপক্ষে লড়াকু স্কোর পায় নিউজিল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ড একাদশ: মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), রস টেলর, জেমস নিশাম, টম ল্যাথাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট, লোকি ফার্গুসন।

ইংল্যান্ড একাদশ: জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, এউইন মরগান (অধিনায়ক), বেন স্টোকস, জস বাটলার, ক্রিস ওকস, লিয়াম প্লাঙ্কেট, জোফরা আর্চার, আদিল রশিদ, মার্ক উড।

শেয়ার করুন: