জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে খেলবেন না : নজরুল ইসলাম খান

পাকিস্তানের নকশা অনুযায়ী সরকার রাজধানীর শেরে বাংলানগর থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, আমি সরকারকে আহ্বান জানাব, সংসদ ভবনের পাশে অবস্থিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে খেলবেন না।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজিত মানববন্ধনে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।

সংসদ ভবনের নকশায় জিয়াউর রহমানের কবর নেই জানিয়ে তা সরিয়ে ফেলার যে কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক তার তীব্র সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বীর উত্তম শহীদ জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে খেলবেন না।

দেশের মানুষ তাঁকে কী পরিমাণ ভালোবাসে তাঁর মৃত্যুর পরে জানাজায় দেখেন নাই? কবর সরানোর চেষ্টা হলে সাধারণ মানুষ অবস্থান গ্রহণ করবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, মোজাম্মেল সাহেবদের কাছে পাকিস্তানের করা নকশা এত পছন্দ হয়ে গেছে কেন? পাকিস্তানের করা ডিজাইন বাস্তবায়নের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে দিতে হবে? আপনাদের তো পাকিস্তানকে এত ভালোবাসার কথা নয়।

সুইস ব্যাংকে অর্থপাচার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আপনারা যে বাজেট দিয়েছেন তা শ্রমিকবান্ধব নয়, কৃষকবান্ধব নয় এবং ব্যবসাবান্ধবও নয়। এই বাজেট ব্যবসায়ী বান্ধব। এতে যারা ব্যবসা করে তাদের মুনাফা বৃদ্ধি পাবে।

কোনো কাজে আসবে না। কারণ এই বাজেট বিদেশে পাচার হয়ে যায়। বিএনপির সুইস ব্যাংকে রাখার অর্থ নেই। সব কিছু লুটপাট করার জন্যই ব্যবসায়ীবান্ধব বাজেট দিয়েছেন আপনারা, যাতে শ্রমিকের কোনো কল্যাণ নেই, কৃষকদের কল্যাণ নেই।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে, সেই টাকা সুইস ব্যাংকে জমা হয়েছে কি না, তা তিনি দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী, আপনি সাধারণ জিনিস ভুলে যান।

আপনি বলবেন, আর মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে? কিন্তু এই অর্থ বছরে কত টাকা পাচার হয়েছে সেই রিপোর্ট তো এখনো প্রকাশ হয়নি। আর যে টাকা পাচারের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে সেটা কোন মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা? সেই রিপোর্ট আপনারা প্রকাশ করছেন না কেন?

বিএনপিনেতা বলেন, গত ১০ বছরে ৪০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব কাদের টাকা? জনগণ ও বাংলাদেশের টাকা। এই টাকা কারা পাচার করল? সে বিষয়ে তো আপনি কোনো খোঁজ নিচ্ছেন না। আর আপনি ভয়ঙ্কর একটি রিপোর্ট দিলেন! আরে ৩০০ আসনে মনোনয়ন বাণিজ্য করলে কত টাকা পাওয়া যেতে পারে?

সাবেক এ রাষ্ট্রদূত বলেন, বগুড়ার-৬ (সদর) আসনে উপনির্বাচনের জয় নিয়ে আমরা অবাক হইনি। কারণ ওই আসনে বিএনপির যে কেউ নির্বাচন করেছে, সেই নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু আজকে পত্রিকায় দেখলাম, যেখানে মোট ভোটের অর্ধেক ভোট পড়েনি, সেখানে কোনো কোনো কেন্দ্রে ৯৭-৯৮ শতাংশ ভোট দেখানো হয়েছে। এমনকি ১০০ শতাংশও ভোট দেখানো হয়েছে! তাই যে যন্ত্র দিয়ে এটা যোগ-বিয়োগ করা হয়েছে, সেই যন্ত্র দিয়ে কাজ হবে না।

বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে আন্দোলন বন্ধ করা যায় না, তা আপনারাই তো ভালো জানেন। ৬ দফার পরে বহু নেতা গ্রেপ্তার হয়। কিন্তু ৭০-এর নির্বাচনে কি আপনাদের হারাতে পেরেছে? আজও একটি নির্বাচন দিয়ে দেখুন না, কীভাবে আপনারা বিএনপির কাছে হেরে যান।

শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান সরোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন: