একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বিএনপির সঙ্গে জোট বাধলেও আওয়ামী লীগের পক্ষেই কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির অন্যতম নীতি-নির্ধারক ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। মঙ্গলবার সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তিনি (কামাল) আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করে মাঠ খালি করে দিলেন, আর আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। এই হচ্ছে তাদের (বিএনপির) ভাড়াটের মুরোদ। ওরা কামাল হোসেনকে ভাড়া করল ওদের জন্য, আর কাজ করল আমাদের জন্য।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচন এলো, লোক ভাড়া করলো। কাকে করল? আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত নেতা, অত্যন্ত শিক্ষিত ও বিদগ্ধ নেতা। আওয়ামী লীগে চক্রান্ত করে ব্যর্থ কামাল হোসেনকে ভাড়া করে সামনে দাঁড় করালো। বলেন, তাকে নিয়ে জিততে পারবে? পারবে না। সমস্ত মাঠ খালি হয়ে গেল, আমার নিজের এলাকায়ও তাদের খুঁজে পাইনি।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, খেলা যদি ফাঁকা মাঠে হয়, কী করব? ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। তারা মাঝপথ থেকে পালিয়ে গেল। এভাবে আমরা বার বার গোল দেব ইনশাল্লাহ।
নাসিম বলেন, কৌশলে হেরে গেছেন। আমাদের কাছে বার বার হেরে গেছেন। ভোটে নেমে মাঠ থেকে পালিয়ে গেলেন। আপনাদের দিয়ে কিছু হবে না। আপনারা খেলতেও জানেন না। খেলা পরিচালনাও করতে জানেন না।
তিনি বলেন, আন্দোলন করার ক্ষমতা আপনাদের নেই। প্রেস ব্রিফিংয়ে মধ্যে পড়ে আছেন আপনারা। আপনারা মাঠে নামতে জানেন না। বললেন পার্লামেন্টে আসবেন না, অবৈধ পার্লামেন্ট। অবৈধ পার্লামেন্টে আজ বৈধ হয়ে বসে আছেন!
এদিন সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় বাজেট বাস্তবায়নে আমলাদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
তিনি বলেন, আমরা প্রতি বছরই বিশাল বাজেট করছি। কিন্তু বাজেট বাস্তবায়ন হয় না। ভারত বা ভিয়েতনামে যদি শতভাগ বাজেট বাস্তবায়ন হয়, তাহলে আমাদের এখানে হবে না কেন? বাজেট বাস্তবায়িত না হওয়ার অন্তরায়গুলো বলতে চাই।
যে যত বড় আমলা, সে তত ফাইল আটকে রাখে। যে যত ফাইল আটকায়, সে তত বড় আমলা। এই আমলাতন্ত্র আমাদের জন্য একটা সমস্যা। আমলাদের মধ্যে কিছু আছেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে বিব্রত ও ব্যর্থ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
এর আগে গত রোববার সংসদে দাঁড়িয়ে এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মো. মনসুর আহমেদ বলেছিলেন, ভবিষ্যতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সহযোগিতা করতেই তিনি কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগ দেন।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার ক্ষোভের কথা বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমেও এসেছে।
প্রসঙ্গত, দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে।
এরপর বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নেওয়ার পর নির্বাচনেও আসে। ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে প্রত্যাখ্যানের পর গণফোরাম থেকে নির্বাচিতরাই আগে এমপি হিসেবে শপথ নেন, পরে বিএনপিও তাদের পথ ধরে।