মুসলিম নুসরাত সিঁদুর মাথায় স্বামীকে নিয়ে ফিরলেন দেশে

মুসলিম পরিবারের মেয়ে নুসরাত জাহান। বাবা হাজী মুহাম্মদ শাহজাহান। ১৯৯০ সালের ৮ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার মা-ও একজন অভিনেত্রী ছিলেন। ২০১০ সালে ফেয়ার ওয়ান মিস কলকাতা নামক একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হন।

তার সৌন্দর্যের কারণে তিনি মডেলিং-এ সুযোগ পান। এরপর তিনি কলকাতার সুপারস্টার জিৎ-এর বিপরীতে এবং রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘শত্রু’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পশ্চিম বাংলায় সুপরিচিত হন। প্রথম ছবি শত্রুর পরেই তার ভক্তসংখ্যা প্রমাণ করে, ভবিষ্যতে সে অভিনয় জগতকে কাঁপাতে সক্ষম।

ভারতের সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন কলকাতার নায়িকা নুসরাত জাহান। এমপি হয়েই তিনি বিয়ের ঘোষণা দেন। এরপর আর সময় নষ্ট করেননি। বেশ ঘটা করেই তুরস্কে গিয়ে বিয়ের কাজ শেষ করেছেন তিনি।

বিয়ে শেষে হাতে মেহেদি, মাথায় সিঁদুর নিয়ে স্বামী নিখিল জৈনকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় ফিরলেন নুসরাত। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে স্বামীর সঙ্গে তার দেশে ফেরার ছবি। সেগুলো নিয়ে চলছে ভক্তদের মাতামাতি।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, শনিবার (২২ জুন) গভীর রাতে কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান আত্মীয়স্বজন আর বন্ধুরা। এ সময় তাদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেয়া হয়। করানো হয় মিষ্টিমুখ।

এর আগে ১৯ জুন সন্ধ্যায় তুরস্কের বোদরুম শহরের সিক্স সেন্সেস কাপলাঙ্কায়া রিসোর্টে অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করেছেন নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈন। পরদিন একই স্থানে খ্রিষ্টান রীতিতেও বিয়ে হয়েছে তাদের। এবার কলকাতায় তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হবে।

বিয়েতে নুসরাত জাহানের পরনে ছিল লাল লেহেঙ্গা চোলি, গলায় বরমালা, ভারী গয়না আর হাতে লাল-সাদা ও সোনালি রঙের চূড় ও কালিরাস এবং মাথায় টিকলি। নিখিল জৈন পরেছিলেন হালকা গোলাপি রঙের শেরওয়ানি। মাথায় সেহরা আর গলায় রত্নখচিত মালা। বিয়ের আসরে নুসরাত জাহান আসেন রাজকন্যার বেশে আর রাজপুত বরের বেশে নিখিল জৈন।

গত সোমবার হয়েছে ইয়ট পার্টি। মঙ্গলবার হলো মেহেদি ও সংগীতের অনুষ্ঠান। বুধবার বিয়ের আগে সকালে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়। আর বৃহস্পতিবার খ্রিষ্টান রীতিতে বিয়ের পর সেদিন রাতে হয়েছে ‘হোয়াইট ওয়েডিং’ পার্টি।

নুসরাত জাহান ও নিখিল জৈনের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে আগামী ৪ জুলাই, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়, কলকাতায় আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে।

এদিকে বিয়ের উদ্দেশ্যে ১৬ জুন রাতে স্বামী নিখিল জৈন আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে উড়াল দেন নুসরাত জাহান। যখন তার নির্বাচনী এলাকায় রাজনৈতিক বিরোধে তিনজন নিহত হয়েছেন, এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে, যেকোনো সময় বড় কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে, ঠিক সেই সময় নিজের বিয়ের জন্য তুরস্কে যান নুসরাত। এ নিয়ে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।

তবে বিয়ে শেষে ফিরে বিমানবন্দরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন তিনি। নুসরাত বলেন, ‘সবকিছু দলের লোকজন নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। তুরস্কে বসেই প্রশাসনের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

পাশাপাশি মুসলিম মেয়ে হয়েও হিন্দু রীতিতে বিয়ে করার জন্যও বেশ সমালোচিত হচ্ছেন নুসরাত জাহান।

শেয়ার করুন: