ইন্টারনেট থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে যুবকরা

জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া যুবকদের অধিকাংশই ইন্টারনেট থেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।

শনিবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে নাগরিকদের অংশগ্রহণ’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় এমন তথ্য জানানো হয়।

এটিইউ’র অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, হলি আর্টিজান হামলা পরবর্তি সময়ে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার ২৫০ জনের মধ্যে জরিপ করা হয়েছে।

এতে দেখা যায়, জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া ৫৬ ভাগই মূল ধারার অর্থাৎ সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে এসেছেন। যেখানে ২২ ভাগ মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার এবং ইংরেজী মাধ্যম ও অশিক্ষিত রয়েছেন বাকি ২২ ভাগ। সেই হিসেবে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়াদের প্রায় ৬০ ভাগই সাধারণ ও ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থার। এদের মধ্যে প্রায় ৮২ ভাগই ইন্টারনেট জগতের কোনো মাধ্যম হয়ে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে তিনটি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি) ও হিজবুত তাহরির এই তিনটি সংগঠন বর্তমানে সক্রিয় থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার চেষ্টা করছে।

এদের কেউ কেউ আবার আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা, আল কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্টস (একিউআইএস) এবং ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া (আইএসআইএস) থেকে অনুপ্রাণিত। বাংলাদেশের জঙ্গিদের সবাই হোমগ্রোন এবং কেউ কেউ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

জঙ্গিবাদকে রুখতে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহন জরুরী মন্তব্য করে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আমরা সকলের বিশেষ করে যুব সমাজের আরো বেশি অংশগ্রহন চাই। জঙ্গিদের একটা বড় অংশ ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে।

ইন্টারনেট দুনিয়ায় এ ধরনের কার্যক্রম রুখে দেওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে আমাদের বিশেষায়িত টিমের সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা ভার্চুয়াল জগত মনিটরিং করে যাচ্ছেন। এটি রুখে দিতে তরুণ সমাজের সচেতনতা সবচেয়ে জরুরী।

কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) ইউনিটের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হাসান মল্লিকসহ অন্যরা।

ইসিটাপের সিনিয়র ল এনফোর্সমেন্ট অ্যাডভাইজার ও প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কার্ল ক্লার্ক তরুনদের কাছ থেকে জঙ্গিবাদের বিষয়ে বিভিন্ন মতামত শুনেন এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি লুসি ডেলি তার নিজ দেশে সকল ক্ষেত্রে তরুনদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের উদ্যোগে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ফর পিসের (সিডিপি) সহায়তায় এ কর্মশালায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

শেয়ার করুন: