ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে

সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, শুধু কথার কথা নয়, অবশ্যই ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করে না, বিদেশে পাচার করবে, কিংবা পালিয়ে যাবে তারা যেন আর ঋণ না পায়, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত ১৭ জুন মহান সংসদে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৯-২০ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের সমাপনী আলোচনায় ব্যাংকে তারল্য সংকটের অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন- ‘বলা হচ্ছে ব্যাংকে টাকা নেই। ব্যাংকে টাকা থাকবে না কেন? অবশ্যই টাকা আছে। ব্যাংকে টাকা আছে। তবে লুটে খাওয়ার টাকা নেই।

সাবেক এ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যটি খুবই প্রণিধানযোগ্য। যেহেতু উনি প্রধানমন্ত্রী, তাই উনার কাছে অবশ্যই প্রকৃত তথ্য থাকবে। এটিই স্বাভাবিক। সঙ্গতকারণে আমি প্রধানমন্ত্রীর তথ্যকে সঠিক বলে ধরে নিচ্ছি।

‘একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর এই তথ্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলব, ব্যাংকে যে টাকা আছে অবশ্যই তার সদ্ব্যবহার করতে হবে। যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করে না, বিদেশে পাচার করবে, কিংবা পালিয়ে যাবে তারা যেন আর ঋণ না পায়, সে নিশ্চয়তা দিতে হবে।’

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, পাশাপাশি ব্যাংকে যে অর্থ আছে তার বেশিরভাগ শিল্পখাতে বিনিয়োগের সুব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার জোরাল দাবি থাকবে, শিল্প ঋণের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে।

‘যারা ভালো শিল্পোদ্যোক্তা, ঋণ গ্রহিতা হিসেবে যাদের ব্যাপক সুনাম রয়েছে তাদেরকে এই তহবিল থেকে আরও বেশি করে ঋণ দিতে হবে। অবশ্যই সেটি হতে হবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সিঙ্গেল ডিজিটের মধ্যে সরল সুদে।’

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করে আরও বলতে চাই, ব্যাংকের টাকা আর লুটপাট হতে দেয়া যাবে না। শুধু কথা নয়, অবশ্যই ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে যারা ইচ্ছাকৃত খেলাপী, জাতির সামনে তালিকা প্রকাশসহ তাদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন সময়ের দাবি।

তিনি বলেন, ‘একজন স্বনামধন্য শিল্পপতির সহধর্মীনি হিসেবে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, ‘আজ অবধি আমাদেরকে খেলাপি ঋণের তকমা স্পর্শ করতে পারেনি। চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি- আমার পরিবারের কেউ কোনোদিন খেলাপী নন এবং আমরা বিদেশে একটি টাকাও নিয়ে যাইনি।

‘যা কিছু করেছি, সব দেশের জন্য। যমুনা গ্রুপ একের পর এক শিল্প গড়ে তুলেছে দেশের মানুষের কল্যাণে। ঋণ খেলাপী ও অর্থপাচারকারী হিসেবে যমুনা গ্রুপের কোনো বদনাম নেই। এটা এখন ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সর্বজন স্বীকৃত।’

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, মহান সংসদে এই বক্তব্য দেয়ার অর্থ এই নয় যে, আমার বা আমাদের গ্রুপের কাছে অপ্রদর্শিত অর্থ আছে। শিল্পপতি পরিবারের অন্যতম সদস্য হিসেবে নানা অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, এটি একটি ‘ফর্মুলা’ হিসেবে কাজে দিতে পারে।

তিনি বলেন, ‘অনেকে আছেন, রাতদিন কালো টাকার বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো- এত বছর তো এ নিয়ে অনেক কথা হলো, কিন্তু এই অন্ধগলির পথ তো বন্ধ হলো না। অর্থাৎ আমরা বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছি। তাহলে আসুন সবাই এক সঙ্গে মিলে কঠিন শপথ নেই, আজ থেকে আর একটি কালো টাকার জন্ম হতে দেব না। পাশাপাশি দেশে ও বিদেশে যে কালো টাকা পড়ে আছে তার সঠিক ব্যবহারের পথও মসৃন করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

শেয়ার করুন: