কৃষকের ছেলে মুরসি যেভাবে মিসরের প্রেসিডেন্ট হন

উত্তর মিসরের আল-আদওয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি। তার বাবা ছিলেন একজন দরিদ্র কৃষক।

শৈশবে গাধার পিঠে করে স্কুলে যেতেন তিনি। ১৯৭৫ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশলবিদ্যায় তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। আর ১৯৭৮ সালে তিনি ধাতুবিজ্ঞানে এমএ পাশ করেন।-খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের

সে বছর ১৭ বছর বয়সী চাচাতো বোন নাগলা মাহমুদকে বিয়ে করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে একটি সাময়িকীতে দেয়া সাক্ষাতকারে নাগলা বলেন, ঘরের টুকিটাকি কাজ ও রান্নাবান্নায় তাকে সহায়তা করতেন মুরসি।

তিনি বলেন, মুরসির সবকিছুকে তিনি ভালোবাসেন। আমাদের ঝগড়া কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হতো না।

মিসরের একটি টেলিভিশনকে চ্যানেলকে মুরসি বলেন, নাগলাকে বিয়ে ছিল তার জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

১৯৭৯ সালে তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগ দেন। বেশ কয়েকটি বছর মুরসি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৮২ সাল থেকে মিসরের ফেরার আগ পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ সালে মিসরে ফিরে আসেন কোরআনে হাফেজ মুরসি।

জ্যাগাজিগা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধাতু প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই শিক্ষাবিদ। ২০১০ সাল পর্যন্ত সেখানের অধ্যাপক ছিলেন তিনি।

২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মিসরের পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন মোহাম্মদ মুরসি। ব্রাদারহুডের অধীনে প্রার্থী হওয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে করেছিলেন।

২০১১ সালের বিপ্লবের পর ব্রাদ্রারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডাম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। মুরসি এই সংগঠনের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ২০১২ সালে মুরসির মিসরের প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। দায়িত্ব পালনের এক বছরের মাথায় সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতা হারান।

২০১৬ সালে তাকে কায়রোর কুখ্যাত তোরা কারাগারে স্থানাস্তর করা হয়েছে। প্রায় ছয় বছর নির্জন কারাবাসে ছিলেন তিনি। সোমবার আদালতে বিচার শুনানির ফাঁকে কারাকক্ষের খাঁচার চত্বরে পড়ে যান মুরসি। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

শেয়ার করুন: