‘জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক প্রমাণ দিতে পারলে পদত্যাগ করব’

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সরকার দলের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি হয়ে গেল। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না। এটা দুঃখের বিষয়। মানুষ আমাদের প্রশ্ন করে।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।

অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ঋণ আদায়ের যত প্রক্রিয়া আছে, যত জোরদার প্রক্রিয়া আছে সেটা প্রয়োগ করেন। ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপী। দুর্ঘটনা ক্রমে কেউ ঋণ খেলাপী হলে একটা কথা থাকে।

কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপী। বাস্তবতার প্রেক্ষিত বিবেচনা করে যদি দেখা যায় কেউ খেলাপী ঋণের টাকাও এদেশ থেকে পাচার করে সেটাও ধরতে পারলে তারও রেহাই নেই। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় জোড়দার করা, তদারকি জোড়দার, করা মনিটরিং জোড়দার করা দরকার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপর নানাভাবে প্রশ্ন আসতে পারে। ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি হয়ে গেছে, অথচ আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জবাবদিহিতার আওতায় আনা হল না, এটা দুর্ভাগ্য। এটা জনগণের টাকা। ব্যাংকের নিশ্চয়তা কে দেয়? রাষ্ট্র। এর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আলী আশরাফ বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন উপজেলা পর্যায়ে কর আদায়ের জন্য কর কর্মকর্তা নিয়োগ দেবেন। এখন পর্যন্ত দফতরও নেই, কর্মকর্তাও নেই। কবে আদায় করবেন ট্যাক্স? অর্থমন্ত্রীকে বলেন, এনবিআরকে বলেন শরীরটা শক্ত করে প্রক্রিয়ার মধ্যে যান। তিনি বলেন, দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে আগাবেন আশা করি।

‘জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক প্রমাণ দিতে পারলে পদত্যাগ করব’ স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে ফের বির্তক শুরু করেছে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যরা। দুই দিন সংসদে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে তাদের বক্তৃতা শুরু করেন।

সেই বক্তব্যের জবাবে গতকাল সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান বলেছেন, এবারের সংসদে আর একটি বিরোধী দল যুক্ত হয়েছে। বিএনপির ৬ জন সংসদ সদস্য আছেন। উনারা সবাই বক্তৃতা শুরুটাই করেছেন স্বাধীনতার ঘোষক একজন ব্যক্তির নাম নিয়ে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এবং ঘোষণায় দেশ স্বাধীন হয়েছে। একজন ব্যক্তির নাম বলা হয়েছে উনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন সে হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কোন দিন এই বাংলাদেশে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এ রকম কোন প্রমাণ যদি ওই সদস্যরা সংসদে হাজির করতে পারেন, এই সংসদ থেকে আমি পদত্যাগ করব।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, উনারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চান। মুক্তি চাইতেই পারেন। কি কারণে জেলে গেছেন? সেকথা দেশের সবাই জানেন। এই নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি হবে না। এই নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপি টিকে থাকবে না। এগুলো বদলান। যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোন মানুষকে সম্পৃক্ত করতে পারেন, যাদের প্রতি মানুষের বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে সে রকম কাউকে দিয়ে যদি দল পুন:গঠন করার চেষ্টা করেন আগামীতে তাহলে দল টিকে থাকার পথ খুঁজে পাবেন।

তিনি বলেন, জিয়া যুদ্ধ করলেন। ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিল। দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারালেন। স্বামী যুদ্ধ করছে মাঠে আর তার স্ত্রী কোথায়? যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি উনি সেই ক্যান্টনমেন্টে ৯ মাস কিভাবে থাকলেন? তার ব্যাখা দিলেন না, কিভাবে ছিলেন?

জিয়া তাকে আনতে লোক পাঠালেন উনি বললেন ভাল আছেন। এই দেশে যুদ্ধে যে সকল মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদের বীরাঙ্গনা বলা হয়, দুর্ভাগ্যবশত খালেদা জিয়াকে কি নামে ডাকবে সেটা দেশের মানুষ আজ পর্যন্ত জানল না। বুঝতে পারছে না। ভাল থাকলে কিভাবে থাকলেন সেটা জানা দরকার। কষ্টে থাকলে সেটাও বলেন। আমরা দুঃখের ভাগিদার হতে পারি।

সংসদের বৈধতা নিয়ে বিএনপি দলীয় এক সংসদ সদস্যদের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদ অবৈধ হলে সংসদে আসলেন কেনো? আপনি বৈধ হলেন আর ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবৈধ হলেন কিভাবে?

আসলে সেটা না তারেক রহমান ব্যবসাটা ঠিক মত করতে পারেনি বলে এই ভরাডুবি। বগুড়ার উপ নির্বাচনে তারেক রহমান ১০ কোটি টাকা নিয়ে সিরাজকে মনোনয়ন দিয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, মুক্তির বিষয়, সেটা সংসদের বিষয় না, রাজনীতির বিষয় না, দুর্নীতির বিষয়। আরেক জন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে বসে আছেন। যার দুর্নীতির দায়ে সাজা হয়েছে।

নেতাগিরি করতে হলে দেশে আসতে বলেন, কোর্টকে ফেস করতে বলেন। এই রকম অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে দলের নেতা বানালে তাদের সেই দল চালানোর দিন শেষ হয়ে গেছে। সব বাদ দিয়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে আসতে হবে।

শেয়ার করুন: