প্রথম ও শেষ কথা জয়: মাশরাফি

বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে সোমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্যে এ ম্যাচে জয়টা খুবই বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে টাইগারদের। তাই উইন্ডিজের বিপক্ষে দল জয় ছাড়া অন্যই কিছুই ভাবছে না বলে জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

টনটনের সমারসেট ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রথম ও শেষ কথা হলো জয় প্রয়োজন। আমরা যদি আরও একটি ম্যাচ জিতে থাকতাম। তবু এই ম্যাচে জয় খুবই দরকার থাকত। তাই জয়ের কোনো বিকল্প কিছু নেই। শারীরিকভাবে সবাই ঠিক থাকার কথা। ছোট ছোট ইনজুরি থাকবেই- এটি স্বাভাবিক। বিশ্বকাপে ভালো করতে হলে একজন, দুজন নয়, সবারই দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে।

যতদূর সম্ভব দলের বেনিফিট হয়, সেটি লক্ষ্য রাখা দরকার অধিনায়ক হিসেবে। আমি সেটি চেষ্টা করেছি। আশা করি, এটি দলকে আরও বেশি উৎসাহী করবে। এ মুহূর্তে আমার কাছে মনে হয়, সবার নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবা উচিত। এমন চিন্তা আসাটাই স্বাভাবিক।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গেল ৯ ম্যাচের মধ্যে সাতটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। তাই সম্প্রতি পারফরম্যান্সে ক্যারিবীয়দের চেয়ে এগিয়ে টাইগাররা। কিন্তু এটি মানতে নারাজ মাশরাফি। এদিন নতুন ম্যাচ, সবকিছুই নতুনভাবে শুরু হবে। তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হলে অন্যরকম পরিকল্পনা থাকে। তবে এ ধরনের টুর্নামেন্টে একেক দিন একেক দলের সঙ্গে খেলতে হয়।

তাই সেভাবে মাইন্ডসেট থাকে না। প্রত্যক ম্যাচশেষে অন্য দল নিয়ে চিন্তা করতে হয়। উইন্ডিজ যেকোনো দিনই প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দিতে পারে। আমাদের সেটি মাথায় রাখতে হবে। আমাদের সেরাটাই খেলতে হবে। আগের ৯ ম্যাচের সাতটিতে জিতেছি, তার মানে এই নয়, আমরা এখানে সহজেই জিতে যাব। আমাদের ভালো খেলতে হবে।

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের ব্যাটিং লাইনআপ এবং অতীতের কথা চিন্তা করে স্পিন দিয়েই শুরুতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ইঙ্গিত দিলেন মাশরাফি, মিরাজের সাফল্যের সুযোগ আছে। তাদের টপঅর্ডারে প্রথম দিকে পাঁচজনের মধ্যে কিছু বাঁ-হাতি থাকছে। তাই তাদের অ্যাটাক করতে হলে অফস্পিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া অন্য কোনো পরিকল্পনা করা যায় কিনা, তাও আমরা ভাবছি। তবে যেভাবে আমরা আগে সাফল্য পেয়েছি, আমাদের সেভাবেই ফোকাস করা উচিত।

টনটনের উইকেট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিউজিল্যান্ড ম্যাচের স্মৃতি রোমন্থন করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনি বলেন, উইকেটের ওপর একটি দলের হার-জিত নির্ভর করে। আমার কাছে মনে হয়, আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেট মূল্যায়ন করতে পারিনি। আমরা যদি উইকেট ঠিকমতো পর্যবেক্ষণ করতে পারতাম, তা হলে চিন্তা করতাম ২৭০ বা ২৬০ করলেই হতো।

ওই রান সেই ম্যাচে জেতার মতো ছিল। এই উইকেটে বিভ্রান্তি আছে। প্রথম দিকে শুনেছি ঘাস থাকবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, ফ্লাট উইকেট। আমার মনে হয়, যারা উইকেটে যাবে; তারা দ্রুত উইকেটের মূল্যায়ন করতে পারবে।

ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং লাইনআপে বেশ কজন বিগ হিটার রয়েছেন। এ ছাড়া বোলিং লাইনআপে পেস বোলাররা বেশ শক্তিশালী। তাই তাদের বিপক্ষে পরিকল্পনা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ম্যাশ বলেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলতে গেলে যেকোনো দলকে পরিকল্পনা করেই খেলতে হয়। কারণ তারা টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলে থাকেন। ওয়ানডেতেও মারমুখী মেজাজে খেলেন ওরা।

এ সময় বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জ থাকে। নিজের ওপর আস্থা রাখতে হবে। ইতিবাচক ব্যাপার হচ্ছে, তারা যেহেতু বড় শট খেলবে, তাই আউটেরও সুযোগ আছে। ওই সুযোগগুলো যদি আমরা নিতে পারি, তবে উইকেট পাব।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে বিধ্বস্ত করতে প্রধান ভূমিকা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের। সরফরাজদের ১০৫ রানেই অলআউট করে দেন ক্যারিবীয় বোলাররা। তাই তাদের বোলারদের নিয়ে দলের ব্যাটসম্যানদের সতর্ক থাকতে বললেন ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক। তিনি বলেন, ওদের বোলিং অ্যাটাককে আমরা খেলে এসেছি।

আগে সাফল্য পেলেও এদিন নতুন একটা ম্যাচ। এখন তারা বোলিং অ্যাটাকে ভালো করছেও। তাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের সেটি মাথায় রেখে খেলতে হবে। শুরুতে ব্যাটসম্যানদের সতর্ক থাকতে হবে। আবার বোলারদের মাথায় রাখতে হবে, যাতে আমরা উইকেট নিতে পারি।

শেয়ার করুন: