রিজভী

সেরে উঠছেন রিজভী

টানা ১৬ মাস ধরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবু কার্যালয় ছাড়েননি। কার্যালয়ের ভেতরে ছোট্ট একটি কক্ষে অবস্থান করছেন তিনি। সেখানেই তাকে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। বিএনপিপন্থী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তার চিকিৎসার দেখভাল করছেন।

কয়েক দিন বেড রেস্টে থাকার পর আগের চেয়ে এখন অনেকটাই সুস্থ রিজভী। তার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে। পেটের সমস্যাও অনেকটা কেটে গেছে। তবে শারীরিক দুর্বলতা এখনও আছে।

গত রোববার রিজভী দলীয় কার্যালয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তার কঠিন পেট ব্যথা শুরু হয়। পরে প্রচুর বমিও হয়। রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এর পর থেকে গত কয়েক দিন ধরেই তিনি স্যালাইন নিচ্ছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ আছে।

রুহুল কবির রিজভী আহমেদ জানান, গত কয়েক দিন পর তিনি এখন কিছুটা সুস্থবোধ করছেন। কয়েক দিনের মধ্যে বুধবার বিকালে প্রথম পানি পান করেছেন। গত কয়েক দিন ধরেই চিকিৎসকদের পরামর্শে সব ধরনের খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন তিনি।

এদিকে অসুস্থ রিজভীকে দেখতে বুধবার রাতে নয়াপল্টন কার্যালয়ে আসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন ও দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। রিজভী আহমেদকে দেখতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি মিনিট পাঁচেক সময় রিজভী আহমেদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান।

বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ৬ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় দলের দাফতরিক কার্যালয়। সেখানে বিএনপির মহাসচিবের কক্ষ, সংবাদ সম্মেলনকক্ষ, দাফতরিক বিভাগ, একটি রান্নাঘর, তিনটি টয়লেটসহ ৬টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে রিজভী আহমেদ প্রায় সময়ই দফতর বিভাগের নিজের কক্ষে অবস্থান করেন। তাকে ঘিরে দিনের প্রায় সময়ই বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মী অবস্থান নিয়ে থাকেন। রিজভী যেখানে বসে দাফতরিক কাজ করেন তার পেছনে (দক্ষিণে) একটি ছোট কক্ষে তিনি দিনে বিশ্রাম নেন আবার রাতে ঘুমান। তিনি সেই ছোট্ট কক্ষেই রাতে ঘুমান।

রিজভী আহমেদ জানান, তার অসুস্থতা র্দীর্ঘদিনের। আশির দশকের শেষ দিকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলি তার মেরুদণ্ড ভেদ করে যায়। সেই থেকেই তিনি কার্যত অসুস্থ। তিনি জানান, গুলি লাগার কারণে তার খাবার হজমে সমস্যা হয়। খাবার তার খাদ্যনালিতে আটকে যায়। চিকিৎসকদের ভাষায় এ রোগের নাম সাব-একিউট ইন্টেস্টেনাল অবস্ট্রাকশন।

বিএনপির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ১৯৮৪ সালে রিজভী আহমেদের পেটে ও মেরুদণ্ডে গুলি লাগে। এ কারণে তার মাঝেমধ্যেই ব্যান্ড এডিকশন সৃষ্টি হয়। এ কারণে তিনি প্রায়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি এ কারণে আগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তিনি জানান, রিজভী আহমেদের যিনি অপারেশন করেছিলেন, তিনি দেশের খুব সিনিয়র একজন চিকিৎসক অধ্যাপক সানোয়ার হোসেন। এবারও আমরা ওনার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। তিনি এসে দেখেও গেছেন। তিনি বলেছেন- আমরা যে চিকিৎসা ওনাকে দিচ্ছি তা ঠিক আছে।

ডা. রফিক আরও বলেন, এ মুহূর্তে রিজভী আহমেদকে হাসপাতাল বা বাসায় নেয়ার তেমন প্রয়োজন নেই।

শেয়ার করুন: