কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ঈদের আগেই মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শনিবার (১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আকরাম খাঁ হলে এক আলোচনা সভায় তিনি এ দাবি জানান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় দল।
এ সময় সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে এখন মুক্তি দিন। আর তো জেলে রাখার দরকার নেই। আপনাদের কাজ তো আপনারা করেই ফেলেছেন। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীকে বন্দি রেখে একতরফাভাবে ভোট ছাড়াই তো ক্ষমতা দখল করেছেন। এখন ঈদের আগেই বেগম জিয়াকে মুক্তি দিন। তা না হলে জনগণ যখন বিক্ষোভ করবে তখন কিন্তু এক মুহূর্তও টিকতে পারবেন না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আইনি লড়াইয়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। যার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। সম্প্রতি লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী উনার বক্তব্যে বলেছেন, ‘তারেক জিয়াকে লাফালাফি করতে নিষেধ না করলে তার মা কোনও দিন কারাগার থেকে মুক্তি পাবে না’। এতেই বোঝা যায়, দেশের আইন-আদালতও এখন সরকারের কাছে জিম্মি। মনে যেন, প্রধানমন্ত্রী যেদিন চাইবেন সেই দিনই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন।
কৃষকদের প্রতি ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের কোনও দয়া মায়া নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ভুল পলিসির কারণে কৃষকরা তাদের মাঠের পাকা ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। গণতন্ত্র বন্দি থাকায় আজকে সব জায়গায় এতো অনিয়ম। এই বন্দি গণতন্ত্রকে আগে মুক্ত করতে হবে। তার আগে গণতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। বেগম জিয়াকে মুক্ত করে তার নেতৃত্বে এদেশে আবারও গণতন্ত্র ফিরিয়ে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এজন্য জনগণের মধ্যে ইস্পাত কঠিন গণঐক্য তৈরি করতে হবে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে যা কিছু মঙ্গলজনক সব ক্ষেত্রে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত আছে। ২৫ মার্চের কালো রাতের পরে দেশের মানুষ রাজনৈতিক নেতাদের থেকে একটা দিকনির্দেশনা চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হলে সেই কাঙ্ক্ষিত দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন একজন সেনা কর্মকর্তা। তিনি আর কেউ নন, তিনি মেজর জিয়াউর রহমান।’
মোশাররফ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় চেতনা ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। সেই গণতন্ত্র আওয়ামী লীগ ধ্বংস করলো বাকশাল করে। আবার এই গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করলেন মেজর জিয়া। এখানেও জিয়াউর রহমানের কাছে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা ব্যর্থ।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমানের নাম অনেক জায়গা থেকে মুছে দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁকে মানুষের মন থেকে মুছে দেয়া সম্ভব হয়নি। কারণ এদেশের মানুষ এখনও সংঘবদ্ধ। এটা বুঝতে পেরেই একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি করেছে। এটাইতো প্রমাণ করে শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি মানুষের কাছে কতটা জনপ্রিয়। আর সেই জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়েই বেগম জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাড. সৈয়দ এহসানুল হুদার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।