স্টোকসের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের শুভ সূচনা

উদ্বোধনী ম্যাচেই প্রমাণ পাওয়া গেল কেন এবারের বিশ্বকাপে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হট ফেবারিট বলা হচ্ছে। ভরা গ্যালারির সামনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল ইয়োইন মরগ্যানের দল। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বিপদে পড়লেও ঠিকই তিনশ ছাড়িয়ে যায় ইংলিশদের স্কোর।

৩১২ রানের সেই টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩৯.৫ ওভারে মাত্র ২০৭ রানেই গুটিয়ে যায় ফাফ ডু প্লেসিসের দল। ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয় ১০৪ রানের বিশাল ব্যাবধানে। মরগানরা যেন বাকী দলগুলোকে দেখিয়ে দিলেন নিজেদের শক্তিমত্তা।

লন্ডনের কেনিংটন ওভালে রান তাড়ায় নেমে ইংল্যান্ডের ক্যারিবীয় পেসার জোফরা আর্চারের গতির তোড়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। প্রোটিয়াদের দলীয় ৪৪ রানের মধ্যে আর্চার তুলে নেন এইডেন মার্করাম (১১) এবং অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিসকে।

এরপর দলের হাল ধরেন কুইন্টন ডি কক এবং ভেন ডার ডাসেন। জুটিতে আসে মূল্যবান ৮৫ রান। ৭৪ বলে ৬ চার ২ ছক্কায় ৬৮ রান করা ডি কককে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট। বেশিদূর যেতে পারেননি জেপি ডুমিনি। ৮ রান করে ফিরেছেন মঈন আলীর ঘূর্ণিতে।

এরপর প্রিটোরয়াস রানআউট হয়ে গেছে ১৪৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় প্রোটিয়ারা। এরপর যেন আরও চেপে বসে স্বাগতিক দল। দ্রুত ফিরে যান ভেন ডার ডাসেন (৫০) এবং আন্দিলে ফেলুকায়ো (২৪)।

১৮০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কার্যত হার দেখে ফেলে প্রোটিয়ারা। বাকী ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা। শেষ পর্যন্ত ৩৯.৫ ওভারে ২০৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আলোচিত পেসার জোফরা আর্চার ৭ ওভারে ১ মেডেনসহ মাত্র ২৭ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন বেন স্টোকস আর লিয়াম প্ল্যাংকেট।

এর আগে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৩১১ রান তোলে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। পেসের স্বর্গরাজ্যে স্পিন দিয়ে বোলিং ওপেন করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস।

বর্ষীয়ান লেগ স্পিনার ইমরান তাহির এবং তরুণ পেসার লুঙ্গি এনগিডিকে দিয়ে শুরু করেন বোলিং। প্রথম ওভারেই 'গোল্ডেন ডাক' মারেন ইংলিশ ওপেনার জনি বেয়ারস্টো।

শুরুতেই আসে সাফল্য। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই জনি বেয়ারস্টোকে ফেরত পাঠান আগাম অবসরের ঘোষণা দিয়ে রাখা ইমরান তাহির। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেই 'গোল্ডেন ডাক' এর ঘটনা দেখা গেল।

আর এই বিব্রতকর রেকর্ডের মালিক হন জনি বেয়ারস্টো। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খাওয়ার পর ইংল্যান্ডকে পথ দেখান ওপেনার জেসন রয় এবং জো রুট। দুজনে মিলে গড়েন ১০৬ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। শেষ পর্যন্ত এই জুটিতে ভাঙন ধরান তারকা পেসার কাগিসো রাবাদা।

এই পেস সুপারস্টারের বলে ৫৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫১ রান করা জো রুট ক্যাচ তুলে দেন জেপি ডুমিনির হাতে। পরের ওভারেই জেসন রয়কে (৫৪) ডু প্লেসির তালুবন্দি করেন আন্দিলে ফেসুকায়ো। এই বিপদ সামাল দেওয়ার মতো রসদ মজুদ ছিল ইংলিশ দলে।

সুতরাং ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে যান অধিনায়ক ইয়োইন মরগান এবং অল-রাউন্ডার বেন স্টোকস। দুজনেই ফিফটি পূরণ করেন। ১২৫ রানের এই জুটি ভাঙেন সেই ইমরান তাহির। ৬০ বলে ৫৭ রান করা মরগান তাহিরের দ্বিতীয় শিকারেপ পরিণত হন।

বিপজ্জনক জস বাটলারকে (১৮) বোল্ড করে দেন লুঙ্গি এনগিডি। এই পেসারের দ্বিতীয় শিকার মঈন আলী (৩)। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন বেন স্টোকস। শেষ পর্যন্ত এই অল-রাউন্ডার ৭৯ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৮৯ রানের দারুণ ইনিংস খেলে এনগিডির শিকার হন।

তারপরেও ইংলিশদের স্কোর তিনশ অতিক্রম করে ক্রিস ওকস (১৩), লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট (৯*) আর জোফরা আর্চারদের (৭*) ব্যাটে। ৬৬ রানে ৩ উইকেট নেন এনগিডি। ২টি করে উইকেট নেন ইমরান তাহির আর কাগিসো রাবাদা।

শেয়ার করুন: