ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে বিয়ে, এরপর...

প্রেমের টানে আল্লাদি ইসলাম (৩৫) ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে হয়ে যান শিখা রানী মন্ডল। ২০০৪ সালে টুটুল মন্ডল নামে ঢাকার শ্যামবাজার এলাকার এক পান ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন তিনি।

বর্তমানে শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলায় স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে দুই সন্তান নিয়ে দু’দিন যাবত স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন শিখা রানী।

স্বামীর পরিবার মেনে না নিয়ে বরং ভয়ভীতি ও মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন বলে ওই নারী অভিযোগ তুলেছে। বর্তমানে টুটুল মন্ডল ও তার পরিবার পলাতক রয়েছে।

শিখা রানী মন্ডল জানান, শরীয়তপুর সদর উপজেলার পালং ইউনিয়নের পূর্বকোটাপাড়া গ্রামের সম্ভু মন্ডলের ছেলে টুটুল মন্ডল প্রায় ১৫ বছর আগে ঢাকার শ্যামবাজার এলাকায় পানের ব্যবসা করতেন। তখন তাদের পানের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার গাজিপুরা গ্রামের সামসুদ্দিন বেপারীর মেয়ে আল্লাদি আক্তার। সেই আল্লাদির সঙ্গে টুটুল মন্ডলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে আল্লাদি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন। তখন আল্লাদির নাম রাখা হয় শিখা রানী মন্ডল।

শিখা রানী বলেন, স্বামীর স্বীকৃতি চাই। সন্তানরা বাবার পরিচয় চায়। আমি সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাই।

পরে ২০০৯ সালে গোপনে তাদের ঢাকা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিয়ে হয়। প্রায় ১১ বছরের সংসার জীবনে তাদের ঘরে দুটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বড় মেয়ের নাম রাখা হয় মরশি রানী মন্ডল ও ছোট মেয়ের নাম রাখা হয় অন্তরা রানী মন্ডল।

বিয়ের পর পাঁচ বছর পরিবারকে না জানিয়ে শিখাকে নিয়ে শ্যামবাজারে থাকতেন টুটুল। পরে টুটুলের পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। জানার পর টুটুল বিভিন্ন কাজ দেখিয়ে সম্পর্কের দূরত্ব বাড়াতে থাকে। গত তিন মাস যাবৎ স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন টুটুল। সেই থেকে শিখা টুটুল মন্ডলের গ্রামের বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

শেষমেশ খুঁজে পেয়ে শনিবার স্বামীর বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার পূর্ব কোটাপাড়া গ্রামে এসে হাজির হন শিখা। এসে দেখেন স্বামী টুটুল আরেকটি বিয়ে করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানতে পেরে একজন এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। ওই নারী থানায় এসে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শরীয়তপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, আগে সনাতন ধর্মে বিয়েতে রেজিস্ট্রি ছিল না। সেই হিসেবে মন্দিরে তাদের বিয়ে হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন সংসার করেছে। দুটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে তাদের। সেই হিসেবে স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব নেয়া উচিৎ টুটুলের। যদি না নেয় তাহলে শিখাকে আইনগত সহযোগিতা করা হবে।

পালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গগন খান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয় নিয়ে সোমবার স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বসা হবে। টুটুল ও তার পরিবার শিখা ও তার মেয়েদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

শেয়ার করুন: