আদালত স্থানান্তরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার রিট

বিএনপি চেয়ারপাসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর আদালত স্থানান্তর করে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ‌আজ রবিবার এই রিট আবেদন দাখিল করেছেন।

আগামীকাল সোমবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এর আগে গত ২১ মে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালত স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন বাতিল চেয়ে আইন সচিব বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আজ রিট আবেদন দাখিল করা হয়।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা ১৭টি মামলার বিচারের জন্য কেরানীগঞ্জ কারাভ্যন্তরের একটি ভবনে বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাস বসানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত ১২ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপন অনুসারে খালেদা জিয়ার মামলার শুনানির জন্য বিশেষ জজ আদালত-৯ এর অস্থায়ী এজলাস পুরাতন ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সরিয়ে কেরানিগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হয়।

ওই আদালতে গত ১৯ মে নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে ওইদিন শুনানিতে হাজির করা হয়নি। একারণে আগামী ৩০ মে মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

এ অবস্থায় ওই প্রজ্ঞাপন বেআইনী ও সংবিধানবিরোধী দাবি করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যে কোন বিচার হতে হবে উন্মুক্তভাবে। কারাগারের একটি কক্ষে উন্মুক্তভাবে বিচার হতে পারে না।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধিতেই বলে দেওয়া আছে কোথায় কোথায় আদালত বসবে। তিনি বলেন, সকল ফৌজদারি মামলার বিচার কার্য পরিচালিত হয় ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী। এই ফৌজদারি কার্যবিধির ৯(১) ও ৯(২) ধারায় আদালত বসানোর কথা রয়েছে। সেখানে কোথাও বলা নেই যে কারাভ্যন্তরে আদালত স্থাপন করা যাবে।

সুতরাং সংবিধান ও ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে যেয়ে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বেআইনি বলে মনে করি। আমরা এবিষয়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছি।

দুটি দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছর) কারাদ-প্রাপ্ত হয়ে গতবছর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি খালেদা জিয়া। সাজা হওয়ার পর থেকে তাকে নাজিমউদ্দিন রোডে সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি ভবনে রাখা হয়। সেখানেই একটি কক্ষে আদালত বসানো হয় তার মামলার বিচারের জন্য। সর্বশেষ গত পহেলা এপ্রিল খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।

শেয়ার করুন: