বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব উল্লেখ করে বগুড়া-৬ উপনির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে সুযোগ পেলেও অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
তবে এবার তিনি এ উপনির্বাচনে লড়তে রাজি হয়েছেন। বিএনপি মান্নার জন্য আসনটি ছেড়ে দেবে। মান্নাকে কঠিন শর্তও দিয়েছে বিএনপি।
উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা বিএনপি না দিলেও, অংশ নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। দলের নীতিনির্ধারকরা এমনই আভাস দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে প্রার্থী খোঁজার কাজও শুরু হয়েছে। বিএনপি চাচ্ছে কেন্দ্রীয় কোনও নেতাকে মনোনয়ন দিতে।
বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, বগুড়ার নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের সম্ভাবনাই বেশি। সে ক্ষেত্রে বগুড়ার এ উপনির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিএনপি বেশ কিছু বিকল্প ভাবছে। দলের জন্য ‘প্রেস্টিজিয়াস’ এই আসনটিতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিএনপি সিরিয়াস। এমন কাউকে দলের টিকিট দিতে চায় যিনি জয়ী হয়ে আসতে পারবেন। আবার সংসদে গিয়ে জোরালো ভূমিকাও রাখতে পারেন।
এ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি নাম বিবেচনায় রেখেছে বিএনপির হাইকমান্ড। দলের গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়ার পাশাপাশি সমমনা দলের নেতাদেরও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার নামটি।
দলের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বগুড়ার নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। তবে এ ক্ষেত্রে একটি কঠিন শর্তও জুড়ে দেয়া হয়েছে।
সেই শর্তের কারণেই আটকে আছে মনোনয়ন ইস্যুটি। সেই শর্তটি মান্না যদি দল (নাগরিক ঐক্য) ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন, তা হলেই তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। তার নিজ দল থেকে নির্বাচন করলে বিএনপি এতে সমর্থন দেবে না।
দলীয় সূত্র বলছে, মান্নাকে বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে মূলত চারটি কারণে মনোনয়ন দিচ্ছি বিএনপি। কারণগুলো হলো:
১. মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়ার সন্তান। এখানে তার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।
২. বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের সভা-সমাবেশে মান্না বড় কণ্ঠসর।
৩. মান্না ডাকসুর সাবেক দুইবারের ভিপি, এ ছাড়াও তার রাজনৈতিক ঐতিহ্য আছে।
৪. ঐক্যফ্রন্ট গঠনে মান্না গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
৫. বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের প্রতি মান্নার সহমর্মিতা রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে আগে বিএনপির টানা অবরোধের সময় আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর পর মান্না গুলশান কার্যালয়ে ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে খালেদার সঙ্গে দেখা করেন।
৬. একাদশ সংসদ নির্বাচনে মান্না ধানের শীষ নিয়ে বগুড়ার একটি আসনে লড়েছেন। তাই প্রেস্টিজিয়াস এ আসনে মান্নাকে বিবেচনায় রেখেছে বিএনপি।
বিএনপি চাচ্ছে মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যাওয়ার আগে সেই প্রস্তাবও দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মান্না বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম লন্ডন থেকে জানতে চেয়েছেন, তিনি বগুড়ায় নির্বাচন করবেন কিনা? করলে বিএনপির হয়ে করতে হবে।’
মান্না বলেন, ‘তখন মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে আমি জানতে চাই- বিএনপির হয়ে মানেটা কী, বিএনপিতে যোগ দিয়ে? জবাবে মির্জা ফখরুল সহাস্যে বলেন, এর মানে তো তা–ই হয়। বিষয়টা এ পর্যন্তই থমকে আছে।