মোবাইল ব‌্যাংকিংয়ে লেনদেন সীমা বাড়ল

মোবাইল ব‌্যাংকিংয়ে লেনদেন সীমা বেড়েছে, এখন দিনে আগের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি টাকা উত্তোলন করা যাবে। আর অ্যাকাউন্টে দিনে জমা বা ক্যাশ ইন-এর পরিমাণও দ্বিগুণ করা হয়েছে। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা এক সার্কুলারে মোবাইল ব‌্যাংকিংয়ে লেনদেনের এ নতুন সীমা জানানো হয়েছে।

এখন একজন গ্রাহক তার অ‌্যাকাউন্টে দিনে পাঁচ বারে ৩০ হাজার টাকা ক‌্যাশ ইন বা জমা করতে পারবেন। আর মাসে ২৫ বারে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ক‌্যাশ ইন করা যাবে।

এতদিন দিনে দুই বারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা করতে পারতেন একজন গ্রাহক। আর মাসে ২০ বারে এক লাখ টাকা ক্যাশ ইন করা যেত।

একইসঙ্গে দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ বারে ২৫ হাজার টাকা তোলা বা ক‌্যাশ আউট করা যাবে। মাসে ২০ বারে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা যাবে ।

এতদিন দিনে দুই বারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা তোলা বা ক‌্যাশ আউট করা যেত। মাসে ১০ বারে ৫০ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন করা যেত না।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) একটি ক্রম বিকাশমান সেবা, যা বিগত কয়েক বছর যাবৎ আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। দেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির সাথে তাল মিলিয়ে এ সেবা বর্তমানে নতুন খাত সম্প্রসারণে যেমন, ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে আগত রেমিটেন্স বিতরণ, ই-কমার্স, ক্ষুদ্র ব্যবসা, বেতন বিতরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

পেমেন্ট ইকো সিস্টেম-এর পরিবর্তিত প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এমএফএস-এর সুশৃঙ্খল ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে এমএফএসের ব্যক্তি হিসাবের মাধ্যমে লেনদেনের সীমা পুনর্নির্ধারণ করা হল।

ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে (পি টু পি) টাকা স্থানান্তরের ক্ষেত্রে এখন প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা এবং মাসে ৭৫ হাজার টাকা লেনদেন করা যাবে। এ প্রক্রিয়ায় এতদিন দিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার এবং মাসে ২৫ হাজার টাকা স্থানান্তর করা যেত।

বর্তমানে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যাকাউন্ট রয়েছে ছয় কোটি ৭৫ হাজারের মতো। এর মধ্যে শুধু বিকাশেই রয়েছে তিন কোটি ১০ লাখ অ্যাকাউন্ট।

মোবাইল ফোনের মাধ‌্যমে আর্থিক সেবা ব‌্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি লেনদেন সীমা কমিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব‌্যাংক।

এরপর ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা নগদ চালু হয়। নগদের প্রতি ট্রানজেকশনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হয়।

এককভাবে নগদের এই বাড়তি সুবিধার পর অন্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও লেনদেন সীমা বাড়ানোর দাবি করে আসছিল।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সীমা বাড়ানোয় সন্তোষ প্রকাশ করে বিকাশ-এর করপোরেট কমিউনিকেশনস প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের আয় বেড়েছে। বেড়েছে ক্রয় ক্ষমতা। অপরদিকে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী। এ পরিস্থিতিতে এই লেনদেন সীমা বাড়ানো উচিৎ ছিল।

“কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঠিক কাজটিই করেছে।” বাংলাদেশ ব্যাংকের রোববারের সার্কুলারে বলা হয়েছে, একজন গ্রাহক আগের মতোই তার ব্যক্তি মোবাইল হিসাবে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা স্থিতি রাখতে পারবেন।

কোনো মোবাইল হিসাবে পাঁচ হাজার টাকা এবং তার চেয়ে বেশি নগদ অর্থ জমা (ক্যাশ-ইন) বা উত্তোলন (ক্যাশ-আউট) করার ক্ষেত্রে গ্রাহককে তার পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড বা তার ফটোকপি এজেন্টকে দেখাতে হবে এবং এজেন্ট গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন।

এজেন্ট গ্রাহকের মোবাইল হিসাবে নগদ অর্থ জমা (ক্যাশ-ইন) এবং উত্তোলনের (ক্যাশ-আউট) বিবরণ পৃথক পৃথক রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন এবং লিপিবদ্ধ প্রত্যেকটি লেনদেনের বিপরীতে গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসই সংরক্ষণ করতে হবে।

শেয়ার করুন: