মায়ের অবস্থা জানতে চাওয়ায় ছেলেকে মারধর করলেন চিকিৎসক

এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীর ছেলেকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৩ মে) বেলা ১১টার দিকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে এ মারধরের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। পরে মঙ্গলবার ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে সাংবাদিকদের হাতে আসে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই চিকিৎকের নাম আনোয়ার উল্যা। তিনি পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা জেলা সিভির সার্জন ডা. মো: হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, এ রকম ঘটনা আমি এখন পর্যন্ত শুনিনি। তবে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তবে পাথরঘাটা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের টিএইচও’র ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি আমার কাছ থেকে মৌখিকভাবে তিন দিনের ছুটি নিয়েছেন।

পাথরঘাটা উপজেলা নাগরিক অধিকার ফোরামের সভাপতি সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া একজন নাগরিকের সাংবিধানিক বা মৌলিক অধিকার। মায়ের অসুস্থতার কারণে সন্তান ছুটে এসে কিছুটা অসৈজন্যমূলক আচরণ করলেও ডাক্তারের এ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল। একজন প্রথম শ্রেণীর নাগরিক এরকম রোগীর ছেলের গায়ে হাত দিয়ে মারধর করা একটি দুঃখজনক ঘটনা।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের প:প: কর্মকর্তা মাসুমুল হক খানের কাছে জানতে তাকে ফোন দিলে তার স্ত্রী ফোন রিসিভ করে জানান তিনি তিন দিনের ছুটিতে আছেন। আগামী রোববার ছাড়া তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না।

পাথরঘাটা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বে মারধরে আহত হয়ে গত শুক্রবার (১০ মে) সকালে হাসপাতালে ভর্তি হন দুলিয়া বেগম। পরে গতকাল সোমবার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুলিয়ার জা রহিমা বেগম জিলানীকে খবর দেয়। জিলানী দ্রুত হাসপাতালের এসে তার মাকে মেজেতে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে নার্সদের ডেকে নিয়ে আসেন।

নার্সরা চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহকে ডেকে নিয়ে আসেন। চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ আসার পরে জিলানী তার মায়ের এ অবস্থার কথা জানতে চাইলে চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ জিলানীকে মারধর করেন। এ সময় জিলানীর মাকেও লাঞ্ছিত করার ঘটনাও দেখা গেছে ওই ভিডিওতে।

দুলিয়া বেগমের ছেলে জিলানী বলেন, মায়ের অসুস্থতার কথা শুনামাত্রই হাসপাতালে গিয়ে দেখি ডাক্তার আমার মাকে দেখতে আসে। ডাক্তার আমাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বললে আমি বের হয়ে না যাওয়ায় আমাকে চর-থাপ্পর মারতে থাকে।

অভিযুক্ত চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ বলেন, আমি ওই ছেলের মায়ের কাছ থেকে একটি ভিডিও সাক্ষাতকার নিতে চাইলে ওই ছেলে আমার উপর আক্রমণ করে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি মাত্র।

শেয়ার করুন: