কেউ মানবতাবাদকেই ধর্ম মেনে আছেন। কেউ পরোপকারের মাঝেই ধর্ম দেখেন। ধর্মবোধ মানুষকে কুসংস্কার মুক্ত করে আলোকিত করে। সত্যিকারের মানবতার দীক্ষা ধর্মই দেয়। দুনিয়ার কোনো মানুষই ধর্মহীন নয়।
ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা প্রহ্লাদ গুরু। যিনি দক্ষিণ দিল্লির পথে পথে অটো চালিয়ে জীবিকা চালনা করেন। সম্প্রতি ভারতের একটি গনমাধ্যমে উঠে এসেছে মুসলিমদের জন্য তার অভিনব উদার মানসিকতার খবর।
তার অটোতে সাদা একটি কাগজে ছাপা অক্ষরে লেখা আছে “রোজাদারদের জন্য ভাড়া লাগবে না।” পুরো রমজান মাস জুরে তিনি রোজাদারদের জন্য এভাবেই বিনা ভাড়ায় সেবা দিয়ে আসছেন বলে জানা গেছে। প্রহ্লাদ তার এলাকাতে প্রহ্লাদ গুরু নামে পরিচিত।
দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। রোজায় এমন উদ্যোগের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “আমাদের এই এলাকায় এমনিতেই মুসলিমদের সংখ্যা কম। দিনে এক দুজন মুসলিম পাওয়া যায়।
প্রচণ্ড এই গরমে তারা কতো কষ্ট করে না খেয়ে রোজা রাখছেন। তাদের এই কষ্টের পেছনে অবশ্যই কোনো না কোনো কল্যাণ রয়েছে বলেই তিনি মনে করেন আর সেজন্য রোজাদারদের আশির্বাদ পেতে তিনি এই সেবা চালু করেছেন।”
তাছাড়া তিনি আরো বলেন, “আমি নিজে অন্য ধর্মের হতে পারি তবে মুসলিমদের আচার ব্যবহার আমাকে সর্বদায়ই মুগ্ধ করে তাই আমি বিশ্বাস করি ধর্ম ভিন্ন হলেও বিধাতা এক ও অদ্বিতীয় এবং আমরা সবাই এক স্রষ্টার দাস সেজন্য এদের সেবা করার মধ্য দিয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।”
তার এই উদ্যোগ সম্পর্কে এলাকার সবাই বেশ খুশি বলেই জানা যায়। সারা ভারত জুরে যেখানে হিন্দু-মুসলিম দ্বন্দ চলছে সর্বদা সেখানে তার এই সম্প্রিতী সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে।
এ বিষয়ে মরিয়াম নামে এক মুসলিম যাত্রী জানান, তারা গাড়িতে উঠে এমন লেখা দেখে অবাক হয়েছেন তারপর আরো বেশি অবাক হয়েছেন যখন প্রহ্লাদের পরিচয় একজন হিন্দু হিসাবে জেনেছেন। এই দিল্লিতে এরকম সহানুভুতিশীল মানুষ সে খুবই কম দেখেছেন বলে মন্তব্য করেন।
প্রহ্লাদের এই মানসিক ও সম্প্রীতি উদ্যোগ নাড়িয়ে দিয়েছে বহু বিবেকবান মানুষের হৃদয়। তার এই পোস্টার ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে দারুনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তার জন্য শুভকামনা পাঠিয়েছেন অনেকেই; অনেকে আবার দিলওয়ালা বলে অভিহিত করেছেন তাকে।