বিএনপি এমপি

সংরক্ষিত আসনে কে হচ্ছেন বিএনপির এমপি?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত নারী আসনের ৫০ জন সদস্যের (এমপি) মধ্যে ৪৯ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ৪৩ জন, জাতীয় পার্টির ৪ জন, স্বতন্ত্র একজন ও ওয়ার্কার্স পাটির একজন।

বিএনপি থেকে যেহেতু ৬ জন এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন সেজন্য একটি খালি আসনে দলটির মনোনীত একজন নারী এমপি নির্বাচিত হবেন।

গত বুধবার (৮ মে) নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিএনপির একটি নারী আসনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০ মের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এখন প্রশ্ন উঠেছে কে হচ্ছেন বিএনপির এই নারী এমপি?

জানতে চাইলে জাতীয় সংসদে সদ্য শপথ নেওয়া বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হারুন অর রশীদ বলেন, এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দলের মহাসচিব অথবা পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।

আপনার স্ত্রী আসিফা আশরাফি পাপিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাপিয়াও প্রার্থী। এখন দল যাকে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তাকেই মেনে নেবো।’

আসিফা আশরাফি পাপিয়া নবম সংসদে বিএনপির মনোনীত পাঁচজন নারী এমপির মধ্যে ছিলেন। সেই সময় জাতীয় সংসদে জোরালো বক্তব্য দিয়ে নজর কেড়েছিলেন তিনি।

এবার তিনি মনোনয়ন পাবেন কি-না তা নির্ভর করছে দলীয় সিদ্ধান্তের উপরে। বিএনপির একটি সুত্র জানায়, এবার নারী এমপি পদে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিএনপির দলছুট মহাসচিব প্রয়াত কেএম ওবায়দুর রহমানের একমাত্র মেয়ে শামা ওবায়েদ মনোনয়ন পেতে পারেন।

দলীয় সূত্র আরও জানায়, লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইতোমধ্যে নারী আসনে কাকে মনোনয়ন দেবেন তা ঠিক করে রেখেছেন। সময় মতো তার নির্দেশে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন।

এদিকে একমাত্র সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপির মনোনীত এমপি কে হবেন এ নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। কেউ বলছেন দলের পাঁচ এমপি যাকে চাবেন তিনিই হবেন। আবার কেউ বলছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাকে চাইবেন তিনিই হবেন।

ইতোমধ্যে আসনটি পেতে দলের নারী নেত্রীরা দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কাছে ধর্না দেয়ার পাশাপাশি তারা সংসদে যাওয়া দলের ৫ এমপির সঙ্গেও লবিং করছেন। কে কাকে পেছনে ফেলে লবিংয়ে এগিয়ে যাবেন এ নিয়ে শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা।

শামা ওবায়েদ কিংবা পাপিয়া ছাড়াও যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তারা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য জেবা আমিন খান,

মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, গুম হওয়া বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাবেক মহিলা এমপি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনি প্রমুখ।

এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথির নামও আলোচনায় আসছে। তবে এ বিষয়ে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে তাদের দুজনকে নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২০ মে এর মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। বাছাই হবে ২১ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৮ মে ও ভোট হবে ১৬ জুন। তবে একাধিক প্রার্থী না থাকলে ২০ মে নির্বাচিত নারী এমপির নাম ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।

সংবিধান অনুসারে, ৩০০ আসনের বিপরীতে ৫০টি সংরক্ষিত আসন বণ্টন করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দলের যদি ৬ জন নির্বাচিত এমপি হন তাহলে ওই দল থেকে একজন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি নির্বাচিত হবেন।

এভাবে প্রতি ৬ জনের জন্য একজন করে আনুপাতিক হারে নারী সদস্য বণ্টন করা হয়। স্বতন্ত্র সদস্যদের বেলায়ও ৬ জনের জন্য ১জন করে নারী সদস্য করা হয়। এভাবে যে দল যতটি নারী আসন পাবে নির্বাচনে ততজন করে প্রার্থী দিলে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়।

আর একাধিক প্রার্থী থাকলে তফসিল অনুসারে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। সেক্ষেত্রে বিএনপির একজন নারী এমপি নির্বাচিত করবেন দলের শপথ নেওয়া ৫ এমপি ও গণফোরাম থেকে নির্বাচিত ২ এমপি। অবশ্য বিএনপি একজনকে মনোনয়ন দিলে আর ভোটের প্রয়োজন হবে না।

শেয়ার করুন: