কী নেই চকের ইফতার বাজারে!

রমজানের প্রথম দিনের শেষ বিকেলে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী চকবাজারের ইফতার বাজার। শত বছরের পুরোনো এ ইফতারের বাজারে হেন কোনো ইফতারের আইটেম নেই যা পাওয়া যায় না। ইফতার সামগ্রীর তালিকায় মুড়ি, বুট, ঘুঘনি, পেয়াজু, আলুচপ, ডমচপ, বেগুনি, ফুলুরি থেকে শুরু করে আস্ত মুরগির মাসাল্লাম, খাসির লেগ রোস্ট, আস্ত কোয়েল পাখি ফ্রাই, গরুর কালা ভুনা, চিকেন ব্রোস্ট, চিকেন কারি,

চিকেন ললি স্টিক, জালি কাবাব, শিক কাবাব সুতি কাবাব, কিচেন কাবাব, সাসলিক, টানা পরোটা, শাহি জিলাপি, হালিম, দইবড়া, বোরহানি, ফালুদা, পিৎজা, পাটিসাপটা পিঠা, মালপোয়া পিঠা, নারিকেলের পিঠা, লাবাং, পেস্তা বাদামের শরবত, ফিরনি, মাঠা, সবুজ আপেল, লাল আপেল, আঙ্গুর, কমলা, তরমুজ, লিচু, পেঁপে, বাঙ্গি, আনারস, বেল, আম, ডালিম, আনার, খেজুর, শসা, কাঁচাবুট, তালের শাস ও আচার সবই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এ ইফতারের বাজারে।

রাজধানীতে আর কোথাও এক জায়গায় এতগুলো ইফতারের আইটেম খুঁজে পাওয়া যায় না বলেই চকবাজারের ইফতারের বাজারের চাহিদা অনেক বেশি। মঙ্গলবার (৭ মে) শেষ বিকেলে চকবাজারের ইফতার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পছন্দের ইফতার কেনার জন্য অসংখ্য মানুষ ছুটে এসেছেন। আসরের আজানের আগেই ক্রেতা-বিক্রেতার কেনা-বেচার আলাপনে গোটা এলাকা সরব হয়ে উঠেছে।

রাজধানীর খিলগাঁও থেকে মতিঝিলের বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আফজাল হোসেন পছন্দসই ইফতার কিনতে এসেছেন। এ প্রতিববেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ৭শ’ টাকায় একটি খাসিরলেগ রোস্ট, ৩শ’ টাকা একটি আস্ত মুরগি, ২শ’ টাকায় দইবড়া, ৩০০ টাকায় এক কেজি পেস্তা বাদামের বোতল ও ৫০টাকা করে ৩০০ টাকায় ৬টা টানা পরোটা কিনেছেন।

প্রতি রমজানের প্রথম দিন তিনি চকবাজার থেকে ইফতার কিনে নিয়ে যান। দাম একটু বেশি হলেও চকবাজারের ইফতারের মজাই আলাদা বলে জানান তিনি। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে প্রথম দিন চকের ইফতার দিয়ে রোজা ভাঙেন।

জিগাতলার বাসিন্দা কোহিনুর বেগম সুতি কাবাব কেনার জন্য দরদাম করছিলেন। দোকানি খাসির মাংসের প্রতি কেজি সুতি কাবাব এক হাজার টাকা ও গরুর মাংসের সুতি কাবাব ৮০০ টাকা কেজি দাম চাইলে কোহিনুর বেগম এতো দাম কেন জানতে চান। এ সময় বিক্রেতা বলেন, রমজানের সময় গরু ও খাসি উভয় প্রকার মাংসের দাম বাড়ে।

এ কারণে আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়। অবশেষে দামাদামি করে কোহিনুর বেগম ৮শ’ টাকা দরে ৪০০ টাকায় আধাকেজি সুতি কাবাব কিনে নেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, চকবাজারের ইফতার খেতে মজা হলেও দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে স্পেশাল আইটেমগুলোর দাম চড়া। সাধারণ ইফতার বাসায় বানানো গেলেও সুতি কাবাবসহ অন্যান্য বিশেষ আইটেম বানাতে পারেন না বলে এখান থেকে কিনে নিয়ে যান তিনি।

শেয়ার করুন: