বাবুনগরী

শাপলা চত্বরের আক্রমণ ইতিহাসের নতুন কারবালা: আল্লামা বাবুনগরী

আল্লাহ ও রাসূল এবং পবিত্র কোরআন-হাদিসের অবমাননাকারীদের শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ট্রাজেডির ৬ বছর পূর্ণ হবে রোববার। শাপলা চত্বরের ওই ঘটনায় শহীদ ও আহতদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেছেন আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা। শনিবার সন্ধ্যায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান করেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, কতিপয় নাস্তিক-ব্লগার, আল্লাহ ও রাসূল, পবিত্র কুরআন-হাদিস অবমাননাসহ ইসলাম, মুসলমান এবং আলেম-ওলামাদের হেয়প্রতিপন্ন করার হীন চেষ্টা চালিয়েছে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে হরদম মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার অপতৎপরতা চালিয়েছিল, তখনই এদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলাম শান্তিপূর্ণভাবে রাজধানী ঢাকা অবরোধ করেছিল।

যা বাংলাদেশের হক্কানী ওলামা-পীর-মাশায়েখ, আশেকে রাসূল (সা.) ও দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতার জন্য রক্তঝরা এক ঐতিহাসিক দিন। কেননা ওইদিনের ট্রাজেডি মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত মর্মান্তুদ ও বেদনাদায়ক।

হেফাজতে ইসলামের দেয়া বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘সারা দিন অবরোধে অবস্থান নেয়া হেফাজত কর্মীরা যখন ক্ষুধা, পিপাসায় ক্লান্ত শরীরে হাহাকার তখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের জন্য সরবরাহকৃত খাবার ও পানির গাড়ি বন্ধ করে দেয়। সন্ধ্যা থেকেই রাস্তার লাইট বন্ধ করে। মতিঝিলের আশপাশের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বিটঘুটে অন্ধকার তৈরি করে নিরস্ত্র ঈমানদার নবীজী (সা.) এর সৈনিকদের ওপর ইতিহাসের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।

পত্রিকার রিপোর্ট মতে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, পিপার গান, বৃষ্টির মতো সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়েছে পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবির যৌথ বাহিনী নিরীহ, নিরাপরাধ, তাহাজ্জুদ গুজার, জিকিররত আলেম হাফেজ ও আশেকে রাসূলদের ওপর। ’

এই নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে হানাদার বাহিনীর বর্বরতার চাইতেও ভয়াবহ দাবি করে বাবুনগরী আরও বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যা চালিয়ে যৌথবাহিনী ইতিহাসে এক নতুন কারবালা সৃষ্টি করেছে। তাদের জানা দরকার, হেফাজত কাফেলার মাতৃভূমি কিন্তু বাংলাদেশ। তারা এদেশের নাগরিক, আইন বিরোধী কোন কর্মকাণ্ডে তারা জড়িত নয়, কোন দাগী আসামিও নয়, আলেমরা শান্তিপ্রিয়, সমাজে তারা মর্যাদাশালী। এরা কোন অন্যায় করে না। আলেম-ওলামাদের সঙ্গে জুলুমের পরিণতি খুব ভয়াবহ।

২০১৩ সালে ৫ই মে ঢাকার শাপলা চত্বরে যারা রক্ত দিয়েছেন, যারা আহত হয়েছেন, তারা কেবল মহান আল্লাহ ও প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ সা. এর ভালবাসা নিয়ে ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এমনটা জানিয়ে হেফাজত নেতারা বলেন, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।

হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা দাবি নিয়ে সেদিন ময়দানে নেমেছিল সে দাবি আজও পূরণ হয়নি। বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে ঈমানি আন্দোলন বন্ধ করার নানা চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন: