ভারতের উড়িষ্যায় আঘাতের পরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ দেশটির পশ্চিমবঙ্গের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ বলছে, এটি বাংলাদেশেও আঘাত হানবে। এজন্য সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবেলায় সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলের ৪ লাখ বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ফণী ঠিক কোথায় অবস্থান করছে, তা আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড় সতর্কতার ৩৮ নম্বর বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের উড়িষ্যা উপকূল ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও উত্তর, উত্তর-পূর্বে অগ্রসর এবং কিছুটা দুর্বল হয়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
আবহাওয়া অফিসে ভাষ্যে, ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার বেলা ৩টায় মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থান করছে।
তবে এটি আরও উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছতে পারে।
শুক্রবার সকাল থেকেই খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ফণীর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হয়েছে। ফলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ঝড়ের সতর্কতায় আরও বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়টির পার্শ্ববর্তী এলাকার নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এজন্য মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ এই বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ এই বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
আর কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা,
পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।