ভারতে তাণ্ডব চালিয়ে যে পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে ফণী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী বিধ্বংসী রূপে অগ্রসর হচ্ছে। গত ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ‘ফণী’ সবচেয়ে শক্তিশালী বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

শুক্রবার (৩ মে) ঝড়টির বাংলাদেশে হানা দেবার কথা রয়েছে।

বর্তমানে প্রবল এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার পুরী উপকূলের দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমের ৩২০ কিলোমিটার ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিমবঙ্গের দীঘার ৬১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণে পশ্চিমে অবস্থান করছে।

অন্ধ্রপ্রদেশের কাছাকাছি অবস্থানে চলে যাওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে রাজ্যের বিশাখাপত্তনমে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। প্রবল বর্ষণের সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়েছে ওড়িশা প্রদেশেও।

এদিকে সর্বশেষ পাওয়া সংবাদ অনুযায়ী, ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সারারাত দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানবে ফণী।

ফ্রান্সভিত্তিক বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আগামীকাল শুক্রবার বিকেলের দিকে ভারতের পুরিতে আঘাত হানতে পারে ফণী। ভারত সরকারের ত্রাণ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওড়িশার ১৩টি জেলার প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার অধিবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

ভারতের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ১৫ জেলায় তাণ্ডব চালাতে পারে ফণী। তারপর পরপরই বাংলাদেশে উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে আঘাত হানবে।

ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা থেকে ফণী যে দুরুত্বে অবস্থান করছে তাতে করে শুক্রবার বিকেলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশে প্রবশে করবে ফণী। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী জেলাগুলো সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।

ইতোমধ্যে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তমে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে তীব্র হাওয়া এবং বৃষ্টির জেরে অন্ধ্রপ্রদেশের রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক পোল ও গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। ঝড় ও বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ স্থানের সন্ধানে বাড়ি-ঘর ছাড়ছেন তারা।

এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের ঘূর্ণিঝড় ফণী বৃহস্পতিবার ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে সন্ধ্যার দিকে খুলনাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে পৌঁছাতে পারে। তবে ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে দেখা দিতে পারে শুক্রবার সকাল থেকেই।

শেয়ার করুন: