নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর সভার খরচের হিসেব চাইব

তিন দফার ভোটগ্রহণ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। সোমবার এ রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ। ভোট যতই এগোচ্ছে, বাড়ছে রাজনৈতিক তরজা, তীব্র বাক্য বিনিময়। তারমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটারদের টাকা বিলির অভিযোগ তুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এখানেই থেমে থাকেন নি তিনি, একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কাছে তার দল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভার খরচের হিসাব চাইবে বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন।

মনোনয়নের সময় নিজের হলফনামায় বেশিরভাগ জায়গাতেই জানি না লিখেছেন বলেও অভিযোগ করে মমতার দাবি, বারাণসী থেকে প্রার্থীপদ বাতিল করতে হবে প্রধানমন্ত্রী মোদির। পূর্ব মেদিনীপুরে পরপর সভায় তৃণমূল নেত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদির সভার খরচের হিসাব রাখার আবেদন জানাব নির্বাচন কমিশনের কাছে। নির্বাচন কমিশন যদি সবার থেকে খরচের হিসাব চাইতে পারে, তার কাছে কেন নয়?

তবে এখানেই থেমে থাকেননি, নিজেদের সভায় লোক আনতে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে হাজার হাজার টাকা বিলি করার অভিযোগ তুলে তৃণমূল সুপ্রিমোর আরও অভিযোগ, ভোট কিনতে টাকা বিলি করছে বিজেপি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে রাজ্যের শাসকদলের প্রধান নেত্রী বলেন, সারাজীবনে নিজের মা ও স্ত্রীকে সম্মান দেননি মোদি। তার কথায়, আপনার লজ্জা হওয়া উচিত, স্ত্রীকে সম্মান না দেওয়ায়, মানুষকে আপনি কী সম্মান দেবেন।

নিজে মোদির হলফনামা দেখেছেন বলে দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, তিনি নিজের স্ত্রীর স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ জানে না। এই ধরণের মন্তব্য আমি পছন্দ করি না, কিন্তু তিনি যে পর্যায়ে যাচ্ছেন, তাতে আমি বাধ্য হচ্ছি বলতে।

মনোনয়নের আগে বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী মোদির পথসভার খরচের তদন্তের জন্য নির্বাচন কমিশনকে বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের শাসনকালে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ঘুরেবেড়ানোর অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, এই ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য পরীক্ষা নয়, কিন্তু আপনার (মোদি) জন্য পরীক্ষা। পাঁচ বছরে আপনি কী করেছেন তার জবাব দেওয়ার সময়।

পাশাপাশি মোদিকে মোহাম্মদ বিন তুঘলকের চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেত্রী। ২০১৬ নভেম্বরে নোট বাতিলের ফলে গৃহবধূ থেকে শুরু করে সাধারণ মধ্যবিত্ত, কৃষক, শ্রমিক এমনকী, ছোটো ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা থেকে মানুষের মুখ ঘুরিয়ে দিতে ধর্মকে ব্যবহার করছে বিজেপি। সিপিআইমের প্রাক্তন নেতাকর্মীদের দিকে অভিযোগের আহুল তুলে মমতা বলেন, যারা আগে লাল জামা পড়তো, তারাই এখন গেরুয়া পাঞ্জাবি পড়ছে। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এলে মোদি, দেশে আর কোনও নির্বাচন হতে দেবেন না বলেও মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, বাংলায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু বিজেপি এখানে একটি সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা করছে। ভোটে এ রাজ্যে দুজন বিশেষ পর্যবেক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে তার অভিযোগ, একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মরত অফিসারদের নির্দেশ দিচ্ছেন, এটি অসাংবিধানিক।

শেয়ার করুন: