গত দুই মাসের রাজনৈতিক পটপরিক্রমা বিশ্লেষণ করে এটি বুঝতে কারো সময় লাগবে না যে, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে এ কথাটি শতভাগ সত্যি। তা না হলে কি করে সম্ভব যারা গোটা জীবন ভর আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতি করেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে নেতা মেনেছেন; তারা এখন ভিড়েছেন বিপরীত আদর্শ ও মেরুর দল বিএনপির সঙ্গে।
অপরদিকে, আবার যারা জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন, তারাও কিনা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন। অথচ তারা রাজনৈতিক জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সঙ্গে জড়িত ছিল। বলা হচ্ছে- নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্ট নেতাদের সম্পর্কে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও জাতীয় যুক্তফ্রন্টের এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মেজর (অব.) মান্নান, শমসের মবিন চৌধুরী, জেবেল রহমান গাণিরা ভিড়ছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে। এ জোটের হয়ে নির্বাচন করবেন তারা। এদের প্রত্যেকেই এক সময় বিএনপি কিংবা বিএনপি ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অপরদিকে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীষ নেতা ড. কামাল হোসেন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, মাহমুদুর রহমান মান্নারা এবার নির্বাচন করবেন ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে। এক সময় তারা আওয়ামী লীগ কিংবা আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
অবশ্য ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের সময় বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা আপত্তি তোলেন। এ রকম পরিস্থিতিতেও কোনো একটি আসনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা কাজ করবে। একইভাবে, যেসব আসনে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা প্রার্থিতা করবেন, সেসব আসনে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে বলেও আশা করি।’ একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াতের সেক্রেটারি ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের প্রতীক ব্যবহার করতে না পারলেও তেমন কোনো সমস্যা হবে। প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনেই আমরা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছি এবং সেসব নির্বাচনে জনগণের সমর্থনের বিবেচনায় আমরা আশাবাদী। তাই, নিজের দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে না পারলেও, বড় কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না বলেও জানান জামায়াতের এই নেতা।