বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত পাঁচ মনোনয়ন কৌশল

মনোনয়ন কৌশল চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। চূড়ান্ত হওয়া কৌশলপত্রে মনোনয়ন ও এর সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। চূড়ান্ত হওয়া মনোনয়ন কৌশলের অন্তত পাঁচটি বিষয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত এমন:

১. কৌশলগত কারণে বর্তমানে আওয়ামী লীগ ১১০ আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করবে। তাঁরা নিশ্চিত ভাবেই আওয়ামী লীগের হয়ে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বাকি আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ এই মুহূর্তেই চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে না।

দল মনোনীত একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। বিরোধী দলের কারা মনোনয়ন জমা দিচ্ছে সেটা দেখেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। যিনি চূড়ান্ত হবেন অপরজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।

২. আওয়ামী লীগের সর্বশেষ মাঠ জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাসদের একাংশের নেতা মঈন উদ্দীন খান বাদলসহ শরিক দলের হেভিওয়েট ও সিনিয়র নেতাদের অবস্থাই নির্বাচনী এলাকায় টলটলায়মান।

এসব নেতার চেয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতার জনপ্রিয়তা বেশি। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোটের শরিক সিনিয়র নেতাদের তৎপর হয়ে ওঠার আহ্বান জানাবেন।

একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে নির্বাচন করা এবং কোনো আসন যেন শরিকদের হাতছাড়া না হয় সেই পরামর্শই তাঁদের দেওয়া হবে। জানা গেছে, শরিকদের কাছে জরিপের রিপোর্ট প্রদর্শন করে, তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে তথ্য জানানো হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতির পক্ষ থেকে নির্দেশ আসতে পারে, আপনাদের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বেশি আসন চেয়েও লাভ নেই। তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে যার জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

৩. যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বর্তমানে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে সব প্রার্থীর পক্ষ থেকেই প্রত্যাহার ফরম সাক্ষর করে রাখা হয়েছে। এর ফলে শেষ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ থেকে একজনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হলে প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া অপর প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যেতে পারবে না, কোনো ঝামেলা পাকাতেও পারবে না।

৪. আওয়ামী লীগের বিরোধপূর্ণ এলাকাগুলো, যেখানে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক, সেখানকার প্রত্যেক নেতার সঙ্গে বৈঠক হবে দলের শীর্ষ নেতাদের। দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ কাজ করলে তাঁকে আজীবন বহিষ্কারসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁদের আগেই অবহিত করা হবে।

৫. এবার নির্বাচন হবে তারুণ্যনির্ভর। আর এবার ভোটারদের একটি বড় অংশই তরুণ। এজন্যই আওয়ামী লীগ মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রবীণদের চেয়ে তরুণদেরই প্রাধান্য দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের এবার মনোনয়ন তালিকার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হবে তারুণ্যের উপস্থিতি।

এই কৌশলগুলো নিয়েই আওয়ামী লীগ তার মনোনয়ন কৌশল চূড়ান্ত করেছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই হয়তো আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত মনোনয়ন কৌশল প্রকাশ করা হতে পারে।

শেয়ার করুন: