আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র বেচাকেনার পর্ব শেষ। এখন বিভিন্ন আসনে প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করার পালা চলছে। নির্বাচন সামনে আসলে অতীত রেকর্ড বা প্রভাব-প্রতিপত্তি বিবেচনায় সব রাজনৈতিক দলেরই কয়েকজন নেতার মনোনয়ন নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, হেভিওয়েট প্রার্থী বলে পরিচিত দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের অনেকেই এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন না।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে একমাত্র মাহবুব উল আলম হানিফ ছাড়া আর কারোর মনোনয়নই নিশ্চিত নয়। বরং যতই মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে ততই মনোনয়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে অন্যতম ডা. দীপু মনি। বর্তমানে তিনি চাঁদপুর- ৩ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। কিন্তু সর্বশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, এই আসনে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এগিয়ে আছেন।
এছাড়া সুজিত নন্দীকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অন্য দিক দিক থেকেও চাপ আছে। এমন পরিস্থিতিতে ডা. দীপু মনি কে ঢাকায় অন্য কোনো আসনে কিংবা সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রভাবশালী নেতা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা- ১৩ আসনের এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানক। মোহাম্মদপুর আসন বলে পরিচিত ঢাকা- ১৩ আসন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বিরোধপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে একটি। এই আসনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানককে নানা রকম ভাবে ঘায়েল করার উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁর প্রচারণার বিষয়বস্তু ঠিক করা হয়েছে। এছাড়া ১৯৯৬ সালের নির্বাচিত এমপি হাজি মকবুল হোসেনও এই আসনে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন ত্রিমুখী অন্তকলহের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা- ১৩ আসনে সম্পূর্ণ নতুন কাউকে, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি বা কোনো বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদপুর- ১ আসনের এমপি মো. আব্দুর রহমানের মনোনয়নও এবার নিশ্চিত নয়। আব্দুর রহমানের আসনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা লিয়াকত শিকদারসহ আরও একজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তুলনায় আব্দুর রহমান অনেক পিছিয়ে আছেন। তাই তাঁর মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনাও যথেষ্ট কম। এছাড়া কুষ্টিয়া- ২ আসনে মাহবুব উল আলম হানিফের মনোনয়ন মোটামুটি নিশ্চিত হলেও সেখানে তাঁর সঙ্গে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু দ্বৈরথ অবশ্যম্ভাবী। সব মিলিয়ে নির্বাচনের মাঠে এবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের অবস্থা নড়বড়ে বলেই মনে করছে দেশের রাজনৈতিক মহল।