আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক তারকাকেই দেখা গেছে আ. লীগের হয়ে মনোনয়নপত্র কিনেছেন। আওয়ামী লীগের জন্য ভোট চাইতে মাঠে নামছেন সিনেমা ও নাটকের বেশ কয়েকজন অভিনেতা-অভিনেত্রী।
মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নির্বাচনী প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির এক সভা হয়। সভায় ছিলেন একঝাক তারকা। প্রকাশ্যে তারকাদের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া নিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। অনেকেই দাবি করছেন, তারকাদের রাজনীতির মাঠে আসা ঠিক না। এতে তাদের প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা কমে যায়, সম্মান নষ্ট হয়ে যায়।
সেসব নিয়ে মুখ খুললেন রিয়াজ। তিনি বলেন,‘কেন এমনটা ভাবা হচ্ছে না আমি ঠিক বুঝি না। একজন তারকারও ব্যক্তিগত জীবন থাকে। তারও রাজনৈতিক আদর্শ আছে। তিনিও ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। সবদেশেই তারকারা রাজনীতিতে যুক্ত হন। কেউ সরাসরি নির্বাচনে কেউবা থাকেন প্রিয় দল ও প্রার্থীর সমর্থনে। আমরা ভারতের রাজনীতিতে যেমন তা অহরহ দেখছি। তেমনি হলিউড তারকারাও প্রকাশ্যে মুখ খুলে প্রিয় ব্যক্তি ও দলকে নিয়ে।’
বাংলাদেশ নিয়ে তিনি বলেন,‘বাংলাদেশেও এটা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অনেক বড় বড় তারকারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আদর্শ লালন করেছেন, নির্বাচনে গিয়েছেন। তাদের নিয়ে তো এতো সমালোচনা হয়নি। তবে এখন কেন হচ্ছে!’ সেসবের কারণও জানালেন এই অভিনেতা,‘কারণ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য অন্যান্য দলের ঈর্ষার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। সেইসব দলের সমর্থকরাই তারকাদের রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করছেন। তারা কিন্তু আওয়ামী লীগ অন্য দলগুলোতে যেসব তারকা যুক্ত হচ্ছেন তাদের সমালোচনা করেন না। এখানেই বিষয়টা স্পষ্ট।’
তিনি বলেন,‘কিংবদন্তি অভিনেতা আছেন অন্য দলে সম্পৃক্ত, আছেন গায়ক-গায়িকারাও। তাদের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক মতের পার্থক্য আছে। কিন্তু বিবাদ-বিভেদ নেই। তারাও আমার সহকর্মী। রাজনৈতিক মতের পার্থক্য হলেও তাদের কোনভাবে খাটো করা যাবে না। তাদেরকে আর ভালোবাসি না এটা বলব? আসলে যে প্রিয় সে সবসময়ই প্রিয়। তারকার বিচার হবে তার স্বভাব, আচরণ, ভালো কাজ দিয়ে।
রাজনীতির পরিচয়ে নয়। যদি কেউ প্রিয় তারকাকে একটি দলে দেখে প্রভাবিত হয় ভালো, না হলেও তো ক্ষতির কিছু নেই। এখানে কাউকে কিছু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে না।’ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কেন? ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করি। তার হাত ধরেই এদেশে চলচ্চিত্র আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করেছিলো।
সেই চলচ্চিত্রের অভিনেতা হিসেবে আমি তার আদর্শকে পাশ কাটাতে পারি না। তাছাড়া আমি একজন সচেতন, বুদ্ধিমান মানুষ। নিজের চোখে যা দেখি সেটাকে কীভাবে অস্বীকার করবো!’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন,‘গেল দশ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল আওয়ামী লীগ সরকার দেশে অনেক উন্নয়ন করেছে। মোটামুটি বলা চলে সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের ছাপ পড়েছে।
আজকে গ্রামের কৃষক তার ফসলের ছবি তুলে তাৎক্ষনিকভাবে তার চিকিৎসা পাচ্ছেন। সেটা কী করে হচ্ছে? তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে। এই উন্নয়ন কী অস্বীকার করতে পারবেন কেউ? তিনি গেল দশ বছরে শতাধিক শিল্পীর পাশে দাঁড়িয়েছেন মোটা অংকের সহায়তা নিয়ে। তিনি দল দেখেননি, মত দেখেননি, ধর্ম দেখেননি। শিল্পী জেনেই তাকে সহায়তা করেছেন। এই নজির তার মতো করে আর কেউ এই দেশে স্থাপন করতে পারেনি। আমি একজন শিল্পী হিসেবে তাই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, আমার নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকেই চাই।’