দুপুরে বিএনপি কার্যালয়ে সংঘর্ষ এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন পেছানোর দাবি একই সূত্রে গাঁথা বলে মনে করছেন অনেকে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচন পেছাতে তারেক জিয়া লাশ চেয়েছিলেন।
গতকাল বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে তারেক জিয়া কথা বলেছেন। এদের একজন নেতাই আজ পুলিশের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। সূত্র বলছে, তারেক বিএনপি নেতাদের বলেছেন নির্বাচন কমিশনে ধরনা দিয়ে লাভ নেই। ‘পরিস্থিতি’ সৃষ্টি না হলে নির্বাচন পেছাবে না। এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে হবে যেন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পেছাতে বাধ্য হয়। বিএনপির একজন নেতা দুপুরের সহিংসতার পর বলেছেন, এটা তো কেবল শুরু, সামনে আরও ঘটনা ঘটবে।
জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে স্পষ্ট আভাস পাওয়া গেছে, নির্বাচন পিছিয়ে তারা একটা বিপজ্জনক সময় সীমায় নিয়ে যেতে চায়, যেখান থেকে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। একটা ‘সাংবিধানিক শূন্যতা’ সৃষ্টি হলেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেক ঐক্যফ্রন্ট নেতা।
বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘বিএনপির খুব কম নেতারাই নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান ছিল। কিন্তু কৌশলগত কারণে আমাদের নির্বাচনে যাবার ঘোষণা দিতে হয়েছে।’
ঐ নেতা বলেন, বিদেশি কূটনীতিকরা বিএনপিকে রীতিমতো নির্বাচনে যাওয়ার চাপ সৃষ্টি করেছিল। তাই নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে আমরা নির্বাচন পেছানোর দাবি চাইছি। নির্বাচন পেছানোর জন্য সরকারকে দু’ভাবে চাপে ফেলতে চায় বিএনপি। প্রথমত: নির্বাচন কমিশনে দেন দরবার করার মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, একটা কিছু ঘটিয়ে। একটা কিছু ঘটানোর রিহার্সেল হলো আজ। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত যদি নির্বাচন কমিশন নির্বাচন না পেছায় তাহলে নির্বাচনের আগে অনেক ‘ঘটনা’ ঘটবে। আর এই ঘটনাগুলোতে নেতৃত্ব দেবে তারেক জিয়া।
সূত্রমতে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে থেকে বাংলাদেশে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিএনপি মুখে নির্বাচনের কথা বললেও ভেতরে জামাতের সঙ্গে মিলে নাশকতার পরিকল্পনা করে রেখেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, একমাত্র মনোনয়ন ফরম বিক্রি ছাড়া নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো প্রস্তুতিই নেই।
বিএনপির অনেক নেতাই ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় এখনো নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কথা বলছেন। বিএনপি ২০১৪’র নির্বাচনও বানচালের চেষ্টা করেছিল কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলনের কারণে শেষ পর্যন্ত সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। এবার বিএনপি এবং জামাত স্বল্পমেয়াদে ঝড়ো তাণ্ডব করতে চায়।
যাতে করে নির্বাচন করা সম্ভব না হয়। ড. কামাল হোসেন বিএনপি নেতাদের বলেছেন, আপনারা শুধু নির্বাচন জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে নিয়ে যান, তারপর যা করা দরকার তা আমি করবো। নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট কি তাহলে নির্বাচন বানচালের কৌশল নিয়েছে?