নির্বাচন

কে এই জুঁই, ভোটে কেমন করবেন তিনি?

সারা দেশে জেঁকে বসছে শীত। চায়ের কাপে ঝড় তুলেছে নির্বাচন। পিছিয়ে নেই পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিও। আনুষ্ঠানিকতার আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তাদেরই একজন জুঁই চাকমা। গত রোববার বিকেলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। একমাত্র নারী প্রার্থী হিসেবে এই আসনে জুঁই সবার মনোযোগ কেড়েছেন। সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন আর সাধারণের দুঃখ-দুদর্শার কথা শুনতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তা লাঘবের।

জুঁই চাকমা বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। বাড়ি দুর্গম বরকল উপজেলার বড় হরিণা ইউনিয়নের রাঙাপানি ছড়ায়। তিনি একটি অনলাইন পত্রিকার বার্তা সম্পাদকও।

ছাত্রজীবনে জুঁই সন্তু লারমার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ছাত্রী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। জুডো ও আর্চারিতে জেলায় তার সুনাম রয়েছে। আর্চারির জাতীয় দলেও খেলেছেন।

জুঁই চাকমা ২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিতে যোগ দেন। দল থেকে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে জেলার ১০টি উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে পার্টির পক্ষ থেকে ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টার টানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে জুঁই চাকমা বলেন, দেশের অন্য এলাকা থেকে পার্বত্য রাঙ্গামাটির পেক্ষাপট ভিন্ন। এখানকার মানুষ নানা সঙ্কটের মধ্যে জীবন পার করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার অবস্থা বেহাল। সুপেয় পানির সঙ্কট তীব্র। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে পিছিয়ে বেশিরভাগ জনগোষ্ঠী। আর এসব জায়গাতেই কাজ করতে চান বাম এই রাজনীতিক, ‘ব্যক্তিস্বার্থে নয়, জনগণের স্বার্থেই আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। বর্তমানে যেভাবে সবকিছুতে দলীয়করণ করা হচ্ছে, এতে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতেই আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি।’

জুঁই চাকমার অভিযোগ, প্রশাসন তার প্রতি পক্ষপাত আচরণ করছে। নির্বাচন ঘিরে পথসভার অনুমতি দেয়নি। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ অন্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করছেন। প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি বিশ্বাস করেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় মূখ্য নয়। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকলে এবং ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হলে ভোটাররা তার পক্ষেই রায় দিবেন।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাঙ্গামাটি জেলার সাবেক সভাপতি সৈকত রঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে এখানে যারাই বিজয়ী হয়েছে, ব্যক্তিস্বার্থে ডুবে থেকেছেন। জুঁই ব্যতিক্রমী মানুষ। আশা করি, তিনি মেহনতী মানুষের কথা বলবেন। মানুষও তাকে মূল্যায়ন করবেন।’ রাঙ্গামাটি আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৮ হাজার ২৪৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৫৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৩৯৫ জন।

শেয়ার করুন: