রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে হারিয়ে দেওয়া সেই নূর মোহাম্মদ মণ্ডল যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগে। জাতীয় পার্টির এই নেতা বিএনপি ঘুরে গত শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন। পীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
জাতীয় পার্টির নেতা নূর মোহাম্মদ মণ্ডল অষ্টম সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে নবম সংসদ নির্বাচনে তিনি ধানের শীষ নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে পরাজিত হন। পরে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন উপজেলা চেয়ারম্যান। নূর মোহাম্মদের দল বদলের বিষয়টি রংপুরের সর্বত্রই এখন আলোচনার বিষয়।
অনেকে বলছেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তার দল বদলটা জরুরি ছিল। এতে অবশ্য আওয়ামী লীগই লাভবান হয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিএনপি ও জাপার ভোটব্যাংক। তবে বিএনপি তা মানতে নারাজ। দলটির নেতারা মনে করছেন, দলের দুঃসময় এলেই তিনি ডিগবাজি মারেন। নূর মোহাম্মদ না থাকলে দলের কোনো ক্ষতিই হবে না।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও পীরগঞ্জ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ মণ্ডল যে সুযোগসন্ধানী নেতা, আওয়ামী লীগে যোগদান করায় তার সেই মুখোশ খুলে গেল। এটি অবশ্য বিএনপিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। কারণ দেশের মানুষ অপশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ এ সরকারকে প্রত্যাখ্যান করবে। আমাদের দল সুদৃঢ় রয়েছে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সরওয়ার জাহান বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ মণ্ডল আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ায় দল লাভবান হয়েছে। এখন থেকে দলীয় দ্বন্দ্ব অনেকটা কমে যবে। এলাকার উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।’ জাপা নেতা স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো নূর মোহাম্মদের অনেক ভক্ত রয়েছে জাতীয় পার্টিতে। তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করায় আমাদেরই কিছুটা ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করি।’
এদিকে আওয়ামী লীগে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নূর মোহাম্মদ মণ্ডল নিজেই। তবে বিএনপি কেন ছাড়লেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন আমি ঢাকায় স্পিকারের সঙ্গে রয়েছি। তাই এ ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে পারব না।’