একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ২০ দলীয় জোট নয় তারা লড়বেন নিজ শক্তিতে। ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর এমন মনোভাব জানিয়ে দেয়া হয়েছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে।
নির্বাচন কমিশন থেকে সম্প্রতি জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হবার পর দলটি বেকায়দায় পড়েছে। তাছাড়া ২০ দলীয় জোটে তাদের সাথে যে ধরনের বিমাতাসূলভ আচরণ করছে তাতেও তারা ক্ষুব্ধ। জামাতের সিনিয়র এক নায়েবে আমীর জানান, এক সময় বিএনপি জামায়াতের ঘাড়ে ভর করে ভোটের রাজনীতি করতো। শত প্রতিকূলতার মাঝেও তারা জামায়াতকে বন্ধুহীন করেনি কিন্তু সময় ও প্রেক্ষাপটের কারণে বিএনপির কাছে জামায়াত এখন বোঝা। তাঁর দাবি, জামায়াতের সাংগঠনিক ভিত্তি এখনো মজবুত আছে। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বেকায়দায় থাকলেও তারা সুসংগঠিত।
আসন্ন নির্বাচনে অন্তত: ৩০টি আসনে শক্ত প্রার্থী দেবার টার্গেট নিয়ে তারা ছক কষছেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব আসনে জামায়াতের সংসদ সদস্য ছিল মূলত: সেসব আসনই তাদের টার্গেট। তবে সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে জামায়াতের যে সুসংহত অবস্থা এবারের নির্বাচনে তারা তা কাজে লাগাতে চায়। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত জামায়াতের শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মূল সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য থেকেই তিনি সার্বিক দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন।
সূত্র জানায়, আলী আহসান মুজাহিদ ও দেলোয়ার হোসেনের পুত্র মাসুদ সাঈদী বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে সার্বিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন। বর্তমানে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, কাদের মোল্লা এবং মীর কাশেম আলীর পুত্র-সন্তানেরা বিভিন্ন মাধ্যমে তৃণমূলের জামায়াত নেতাদের শক্তি এবং সাহস যোগাচ্ছেন।
তবে সার্বিক বিষয়টি যুক্তরাজ্য থেকে একটি কোর টীমের মাধ্যমে সমন্বয় করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, কারান্তরীণ দেলোয়ার হোসেন সাঈদী বিভিন্ন মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন বলে সূত্রটি দাবি করেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবে। যেহেতু তাদের নিজ প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নির্বাচন কমিশন থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সেহেতু তাঁরা স্বতন্ত্র প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবে। জামায়াতের এমন মনোভাবে বিএনপিও কিছুটা উল্লসিত।
কারণ হিসেবে তাঁরা দেখছে জনগণ অনন্ত: বুঝবে জামায়াত নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপির সঙ্গে নেই। তবে বিএনপিকে জামায়াত কতটুকু ছাড় দেয় সেটাও একটা প্রশ্নের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপির কাছে। জামায়াতে ইসলামীর এক নায়েবে আমীর নাম প্রকাশ না করে জানান, যুক্তরাজ্য থেকে যেভাবে নির্দেশনা আসবে জামায়াত সেভাবেই এগুবে। আপাতত বিএনপির সঙ্গে বড় ধরনের কোনো ঝামেলায় না জড়িয়ে নিজেদের ঘরে বড় ধরনের জয় আনতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন।