বিএনপি

বিএনপির ১৫০ সাবেক এমপি বিকল্পধারায়?

বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে বিকল্পধারায় যোগ দেবে বিএনপির দেড় শতাধিক নেতা। এরা সবাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। এরা প্রত্যেকেই অন্তত একবার জাতীয় সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। বিএনপি এবং বিকল্পধারার দায়িত্বশীল সূত্রগুলো এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে বিএনপিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সংলাপ ব্যর্থ হবার পর নির্বাচনে যেতে অনাগ্রহী বিএনপির শীর্ষ নেতারা। কিন্তু বিএনপিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী অধিকাংশ নেতাই নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে।

তাঁদের বক্তব্য হলো, নির্বাচনে না গেলে এলাকায় তাঁদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। নির্বাচনে আগ্রহী বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, ‘২০০৮ এর নির্বাচনে হরেছি। তখন থেকেই এলাকায় অবস্থান ভালো নয়। ২০১৪’র নির্বাচন বর্জন করে, অস্তিত্বের সংকটে পড়েছি। কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে, অনেকে মামলায় জেলে। এবার নির্বাচন না করলে এলাকায় অস্তিত্ব থাকবে না।’ ঐ নেতার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তিন বারের নির্বাচিত এক এমপি।

তাঁর মতে, ‘নির্বাচন না করলে, এলাকায় কর্মীদের ধরে রাখা কঠিন হয়। লোকজন ভুলে যায়।’ গতকাল বুধবার বিএনপি নেতৃবৃন্দ যে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছে তাতেও এই প্রসঙ্গটি আলোচনা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, ২০১৪’র নির্বাচন বর্জন করার পর বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছিল, সেগুলো এখনো চলেছে। এবার নির্বাচন না করলে আবার নতুন মামলা হবে।

বিএনপির অনেক নেতাই মনোনয়ন পেতে লন্ডনে তারেক জিয়ার কাছে ধরনা দিয়েছিলেন। সেখানে ঐ নেতাদের উপঢৌকনও দিতে হয়েছিল। এখন যদি বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে উপঢৌকনের টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। ঐ সময় তারেক জিয়া তাদের আশ্বস্ত করেছিলো যে, এবার বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে যাবে। এজন্য এলাকায় এরা প্রস্তুতিও শুরু করেছিলেন। বিকল্পধারার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বিকল্পধারার সভাপতির যোগাযোগ বেড়েছে। সূত্রমতে, বিকল্পধারা ও যুক্তফ্রন্ট এবারের নির্বাচনে ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।

যে দলের কদিন আগেও ১০০ প্রার্থী দেওয়ার মতো আস্থা ছিল না, তারা হঠাৎ প্রার্থী বাছাইয়েই হিমশিম খাচ্ছে কীভাবে? জানতে চাইলে বিকল্পধারার একজন নেতা বলেছেন,, ‘বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত একটি অংশের বিকল্পধারা থেকে নির্বাচন করার প্রক্রিয়া আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। এখন বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে বিকল্পধারা অনেক যোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থী পাবে। শুধু বিকল্পধারা নয়, প্রার্থী যোগাড় করতে মাঠে নেমেছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে তৃণমূল বিএনপিও। সম্প্রতি নাজমুল হুদার দলকে নিবন্ধিত করতে নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে, নাজমুল হুদারও এখন প্রধান টার্গেট বিএনপি। শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি নির্বাচন না করে, তাহলে বিএনপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নির্বাচনে যাবে তা মোটামুটি নিশ্চিত।

শেয়ার করুন: