এর আগেও তিনবার বরখাস্ত হয়েছিলেন কোটিপতি সেই জেলার!

আবারও সাময়িক বরখাস্ত হতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা তত্ত্বাবধায়ক (জেলার) সোহেল রানা বিশ্বাস। গতকাল শুক্রবার ফেনসিডিল ও সোয়া চার কোটি টাকার সমমূল্যের অর্থসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আজ শনিবার মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সহকারী কারা মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন। তবে এ বিষয়ে আগামীকাল রোববার চিঠির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক আদেশ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

এদিকে, সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রামের ডিআইজি প্রিজন প্রশান্ত কুমার বণিক। তিনি জানান, আগেও সোহেল রানা তাঁর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেছিলেন।

এ ছাড়া মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ নানান অভিযোগে তাঁকে দুইবার সাময়িক বরখাস্ত ও একবার বরখাস্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন প্রশান্ত কুমার বণিক। পরে সোহেল রানা ওই বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে চাকরি ফেরত পান।

গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহগামী আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি কেবিনে চড়ে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে রেলওয়ে পুলিশের একটি দল সোহেল রানার লাগেজ তল্লাশি করে। ওই সময় তাঁর লাগেজ থেকে ১২ বোতল ফেনসিডিল ও নগদ ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

১২ বোতল ফেনসিডিল ও নগদ ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকাসহ আটকের পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস।

পরে সোহেল রানা বিশ্বাসকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে লাগেজ থেকে নিজের নামে এক কোটি ৩০ লাখ টাকার তিনটি চেক ও এক কোটি টাকার দুটি ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট (এফডিআর), তাঁর স্ত্রী হোসনে আরা পপির নামে এক কোটি টাকার দুটি এফডিআর এবং তাঁর শ্যালক রকিবুল হাসানের নামে ৫০ লাখ টাকার একটি এফডিআর উদ্ধার করে পুলিশ।

আটকের পর আজ শনিবার ভৈরব রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফ বাদী হয়ে জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ভৈরব রেলওয়ে থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মজিদ জানান, বিকেলে সোহেল রানা বিশ্বাসকে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

অপরদিকে সোহেল রানার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। আদালত আগামী ২৯ অক্টোবর রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে সোহেল রানাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সোহেল রানা বিশ্বাস ময়মনসিংহ শহরের রামকৃষ্ণ মিশন (আর কে মিশন) রোড এলাকার বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রামের জেলার হিসেবে বেস্ট ইন্সট্রাক্টর পুরস্কার পেয়েছিলেন। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের লাগেজ থেকে উদ্ধার করে চেক ও এফডিআরের চেক।

শেয়ার করুন: