তসলিমা নাসরিন
তসলিমা নাসরিন

বিজেপি সাংসদের সঙ্গে তসলিমার গোপন সম্পর্ক ফাঁস

ভারতে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে নতুন বিতর্কের ঝড় ওঠেছে কলকাতায়। পশ্চিমবঙ্গের লোকসভার বিজেপির সাংসদ জর্জ বেকারের সঙ্গে ফাঁস হয়েছে তার গোপন প্রণয়ের সম্পর্ক।

এই প্রেমিক-প্রেমিকার ভালোবাসার ফসল হিসেবে জন্ম নিয়েছে এক কন্যাসন্তান। অঙ্কিতা নামে ওই মেয়েটি দাবি করেছে, আমার বাবার নাম জর্জ বেকার। মায়ের নাম তসলিমা নাসরিন।

বিজেপি সাংসদের এই অবৈধ মেয়ের খবরে তোলপাড় পড়ে গেছে কলকাতায়। লোকসভার সাংসদ ও অভিনেতা জর্জ বেকার এ বিষয়ে নিশ্চুপ থাকলেও মুখ খুলেছেন তসলিমা নাসরিন।

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, বিনোদন আর কাকে বলে! ... দোষ ওই অঙ্কিতা ভট্টাচার্য নামের মেয়ের, সে প্রেস কনফারেন্স ডেকে এমন একটা আজগুবি খবর দিয়েছে। কোনও সাংবাদিক কিন্তু আমাকে ফোন করে তথ্যের সত্যতা জানতে চায়নি। মেয়েটা কী উদ্দেশে এমন সব মিথ্যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তা সাংবাদিকদের উচিত, বের করা।

কোনও পাগল এসে যা তা বল্লো, সাংবাদিকদের কি তা ছাপিয়ে দেওয়া উচিত যাচাই না করে? পুরোনো ছবি বলে যেটা ছাপিয়েছে, সেটা সল্টলেকের রেখাচিত্রমের মালিক শিল্পী রেখা চক্রবর্তী আর তার নাতনির সঙ্গে।

এর আগে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘কলকাতা ২৪x৭’ অনলাইন নিউজপোর্টালে শুক্রবার সকালে অঙ্কিতা ভট্টাচার্য নামে এক নারীর উদ্ধৃতি দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে অঙ্কিতা ভট্টাচার্য নামের ওই তরুণী দাবি করেন, তার বাবা জর্জ বেকার, মা তসলিমা। কেউই তার সঙ্গে থাকেননি কোনোদিন। গৌরী নামে এক নারীর কাছে তিনি মানুষ হয়েছেন।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পশ্চিম বঙ্গের হাওড়া থেকে বিজেপির মনোনীত সংসদ সদস্য জর্জ বেকারের সঙ্গে তসলিমা নাসরিনের সম্পর্ক ছিল। আর সেই সম্পর্কেরই ফসল অঙ্কিতা ভট্টাচার্য নামের এই নারী।

প্রতিবেদন তসলিমা নাসরিন সম্পর্কে বলা হয়, বাংলাদেশের এই লেখিকাকে ঘিরে নানাবিধ বিষয় নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মীয় বিষয় নিয়ে বিরূপ মন্তব্য। অন্য একটি হল তাঁর যৌন জীবন।জীবনে তিন বার বিয়ে করেছেন তিনি। প্রথমটি আশির দশকে।

পরের দু’টি ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে। বিয়ের বাইরেও যে তাঁর যৌন সম্পর্ক ছিল সেই বিষয়ে অবশ্য কোনও লুকোচুরি রাখেননি তসলিমা। তবে ঠিক কার কার সঙ্গে তিনি নিজের যৌনতা ভাগ করে নিয়েছেন সেই বিষয়ে অনেক বিতর্ক আছে।

পশ্চিমবঙ্গ লোকসভার সাংসদ জর্জ বেকারের পরিচিতি তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি অাসামের এক গ্রিক পরিবারে জন্ম নিয়েছেন। পেশায় তিনি অভিনেতা। অাসমীয় ভাষার পাশাপাশি অনেক বাংলা এবং হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন। যাত্রার মঞ্চ ও টেলিভিশনেও তাকে দেখা গিয়েছে।

২০১৪ সালে রাজনীতির ময়দানে আসেন জর্জ বেকার। লোকসভা ভোটে হাওড়া থেকে লড়াই করলেও জিততে পারেননি। তবে রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন পেয়ে তিনি অ্যাংলো ইন্ডিয়ান হিসেবে লোকসভার সদস্য হয়েছেন।

তসলিমা নাসরিন আর জর্জ বেকারের সম্পর্ক, এবং তাদের অবৈধ সম্পর্কের পরিনতিতে জন্ম নেওয়া মেয়ে অঙ্কিতার দাবির সত্য-মিথ্যা প্রমাণ হয়নি এখনো। তবে অঙ্কিতার কাছে থাকা তাঁর ছেলেবেলার ছবি, যেখানে তসলিমার উপস্থিতি স্পষ্ট, সেটা নিয়েই বাড়ছে অস্বস্তি।

মা অর্থাৎ তসলিমাকে মনে থাকলেও, বড় হওয়ার পর আর তাঁর সঙ্গে কোনোদিন যোগাযোগ হয়নি বলেই জানিয়েছেন অঙ্কিতা। তবে জর্জ বেকারের সঙ্গে নাকি বাবা-মেয়ের স্নেহের সম্পর্ক ছিল বলেই জানিয়েছেন অঙ্কিতা। যদিও বড় হওয়ার পর আর কখনও আসেননি জর্জ।

বর্ধমানের ভাতার থানা এলাকার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা অঙ্কিতা ভট্টাচার্য। যাঁর ছোটবেলা কেটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বেহালায়। তাঁকে পালন করেছেন গৌরী ভট্টাচার্য নামের এক মহিলা যিনি আবার সম্পর্কে জর্জ বেকারের স্ত্রী অর্পিতার বোন।

গৌরীদেবীর মৃত্যু হয়েছে। তবে তার এই পালিত কন্যা এই সম্পর্কে আগেই জানতেন বলে জানা যায়। স্মৃতিচারণের সুবিধার্থে দিয়েছেন কয়েকটি ছবি। একই সঙ্গে তাঁর জন্ম বৃত্তান্ত সম্পর্কে আরও তথ্য-প্রমাণ কোথায় রয়েছে তাও জানিয়েছিলেন।

অঙ্কিতার দাবি, জন্মের পরে বেশ কয়েক বছর জন্মদাতা বাবা-মা জর্জ বেকার এবং তসলিমা নাসরিনের সঙ্গেই কাটিয়েছিলেন। সেই সময়ের বেশ কিছু ছবিওতার কাছে আছে।

একই সঙ্গে সেই ছোটবেলার স্মৃতি আবছা হলেও তাঁর মন থেকে মুছে যায়নি বলেও জানিয়েছেন অঙ্কিতা। পরে যার কাছে তিনি বড় হন, সেই গৌরী ভট্টচার্যের মধ্যস্থতায়ইন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিয়ে হয় অঙ্কিতার।

অঙ্কিতা ভট্টাচার্য আরও জানিয়েছেন যে নিজের প্রকৃত বাবা-মায়ের বিষয়ে জানার পরে জর্জ বেকারের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। নিরাশ হতে হয়নি তাঁকে। অঙ্কিত বলছেন, “জর্জ বেকারের কাছে আমি পিতৃস্নেহ পেয়েছি।” যদিও তা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। অঙ্কিতার অভিযোগ স্ত্রী অর্পিতার চাপেই কন্যা অঙ্কিতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন জর্জ বেকার। বন্ধ করে দিয়েছেন সমস্ত যোগাযোগ।

বাবার সম্মানের কথা ভেবেই সমগ্র বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন অঙ্কিতা। তবে যাতে তিনি চুপ থাকেন তার জন্য অনেক হুমকিও এসেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

শেয়ার করুন: