বিএনপি

কেবল ১টি পদক্ষেপে ক্ষমতায় ফিরতে পারে বিএনপি!

রাজনীতির চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষমতার মসনদ। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের সব দেশেই এই সূত্রটি একেবারে পানির মত সহজ। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারি দল আওয়ামীলীগ এবং মাঠের বিরোধী দল বিএনপি দুটি পক্ষই ক্ষমতায় যেতে মরিয়া। এককথায় দুটি দলেরই পিঠ একেবারে দেয়ালে ঠেকানো।

একদিকে বিএনপি মনে করছে এবারও ক্ষমতায় না বসতে পারলে অস্তিত্ব সংকটে পরবে দলটি। তাছাড়া বিএনপির নেতৃত্ব জিয়া পরিবারের হাত থেকে ছুটে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বেশ। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনে করছে, ফের ক্ষমতায় না যেতে পারলে প্রতিশোধের মারপ্যাচে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পরবেন দলটির নেতাকর্মীরা। এমনকি হেরে গেলে প্রথম দিনেই লাখ লাখ কর্মী-সমর্থককে হত্যা করা হতে পারে বলেও ধারণা দলটির শীর্ষ অনেক নেতার।

এমন রাজনৈতিক পরিবেশে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ফের ক্ষমতায় যাওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হবে বলেও মনে করেন সাধারণ মানুষ। যেহেতু নির্বাচনের সময় সরকারযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ আওয়ামীলীগের হাতে থাকবে সেহেতু ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা কিছুটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে এটা মনে করার মধ্যে দোষের কিছু নেই।

তবে বিএনপি আর ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না এরকম নিশ্চয়তা দেয়াও ঠিক হবে না। ক্ষমতায় ফেরার মতো শক্তি-সামর্থ তাদের রয়েছে। দরকার শুধু নতুনত্ত্ব। আওয়ামীলীগকে টেক্কা দিতে হলে নতুন ফর্মুলা নিয়ে এগুতে হবে দলটিকে। সেইসঙ্গে আওয়ামীলীগ যেন নির্বাচনে কারচুপি বা ভোট জালিয়াতি করে রেহাই না পায় সেজন্য ভারতকে তথা ভারতের সরকারি দল বিজেপি এবং যুক্তরাষ্ট্রকে মুঠোয় নিয়ে আসতে হবে।

সাধারণ মানুষের মনে বিএনপি মানেই খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান। এদের দুজনের যে কোনো একজনও সরাসরি নেতৃত্বে থাকলে অনেক কিছুই ঘটে যেতে পারে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এদের দুজনের কেউই নির্বাচনী মাঠে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না এটা প্রায় নিশ্চিত। ধারণা করা হচ্ছিল হয়তো নির্বাচনের আগে দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।

এসবকিছু বিবেচনা করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির সামনে এখন কেবল মাত্র পথই খোলা আছে। সেটি হচ্ছে- ‘ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আদলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া। এর মানে কী? মানে হচ্ছে-বিএনপির নেতৃত্ব জিয়া পরিবারের হাতে রেখে নির্বাচনের জন্য একজন স্বচ্ছ, যোগ্যতা সম্পন্ন এবং মার্জিত চরিত্রের ব্যক্তিত্বকে ঘটা করে বিএনপির পক্ষে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা। সে ব্যক্তি কিছুটা কম পরিচিত হলেও চলবে তবে ক্লিন ইমেজের হতে হবে। বিএনপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হলে এমনিতেই তার পরিচিত বেড়ে যাবে।

ভারতের সরকারি দল বিজেপিও এই পদ্ধতিতেই নির্বাচন করে আসছে। নরেন্দ্র মোদি দলের প্রধান নন কিন্তু তাকে সামনে রেখেই নির্বাচনে জয় পেয়েছে বিজেপি। এ কারণে ভারতে কংগ্রেসের চেয়ে বিজেপিতে গণতান্ত্রিক চর্যা বেশি হয় বলেই মনে করেন সাধারণ মানুষ। একই ধারায় বিএনপিও নির্বাচনে অংশ নিলে বিজেপির সঙ্গে বিএনপির আদর্শিক সম্পর্ক তৈরি হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। যেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বটে।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই পদ্ধতিটি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেব এতে কোনো সন্দেহ নেই। এবং বিএনপি আওয়ামীলীগের চেয়ে গণতান্ত্রিক দল হিসেবেই পরিচিতি পাবে। আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনা এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে নেতিবাচক কিছু বলতে গেলে সেটা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলেই প্রতিয়মান হবে। এর মাধ্যমে পরিবার তন্ত্রের কিছুটা হলেও অবসান ঘটবে এবং এর কৃতিত্ব পাবে বিএনপি। আমেরিকারসহ বহির্বিশ্বে বিএনপির কদর বাড়বে।

পরিবারতন্ত্র নিয়ে আওয়ামীলীগ তথা শেখ হাসিনা কিছুটা বেকায়দায় পরে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সব চেয়ে বড় কথা নির্বাচনের আগে এরকম একটি নতুন পদ্ধতি সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সারা ফেলবে। এবং শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত মানুষের পজেটিভ আলোচনায় যারা ঠাঁই করে নিতে পারবে তারাই চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছবে। তবে এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ একজন যোগ্য ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া। যিনি আসলেই হবেন ‘দুধে ধোয়া’।

শেয়ার করুন: