তারেক রহমান
তারেক রহমান

‘৬০ দিন সময় পাবেন তারেক রহমান’

বাংলাদেশে ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবজ্জীবন সাজা তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের জন্য বিশেষ কোন সুযোগ তৈরি করছে না বলে আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তারা বলছেন, তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। সুতরাং ব্রিটিশ সরকার এমন কোন পদক্ষেপ নেবে না যাতে তিনি কোন ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েন।

একুশে অগাস্ট হামলা সংক্রান্ত মামলায় রায়ের পর বুধবার বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এই মামলার যেসব আসামী বিদেশে রয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে।

ওদিকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার উদ্যোগী হলে বন্দী সমর্পন চুক্তি (এক্সট্রাডিশন ট্রিটি) না থাকলেও জাতিসংঘ সনদের শর্ত মেনে ব্রিটেন সাজাপ্রাপ্তদের ফেরত দিতে পারে।

‘আমাদের সরকারের উচিত এখনই তারেক রহমানের নামে আবার নতুন করে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা, এবার খুন ও সন্ত্রাসবাদের জন্য। তাকে ফেরত দিতে যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ করাও উচিত আমাদের।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মনে করছেন, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের মধ্যে বন্দী সমর্পন চুক্তি না থাকলেও জাতিসংঘের মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যসিসট্যান্স (এমল্যাট) সনদের আওতায় তারেক রহমানকে বিচারের জন্য হস্তান্তর করা যেতে পারে বলে তিনি বলেন। দুটি দেশের মধ্যে আইনগত এবং বিচারিক সহযোগিতার ভিত্তি এই সনদ বলে বাংলাদেশে আইনমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, এছাড়া ২১শে অগাস্ট মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তারেক রহমানকে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। তাই ফিরে আসা ছাড়া তার সামনে আর কোন পথ নেই।

কিন্তু এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তার যুক্তি: তারেক রহমানকে দু'মাসের সময়সীমার মধ্যেই আপিল করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

তারেক রহমান যদি যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেন, তাহলে 'কন্ডোনেশন অফ ডিলে'র আওতায় আদালত বিলম্ব মার্জনা করে দু'মাস পরও তাকে আপিল করার অনুমতি দিতে পারেন বলে মি. আহমেদ বলেন।

এক্ষেত্রে সময়সীমার কোন বাধ্যবাধকতা থাকেন না বলে তিনি জানান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত প্রধান তারেক রহমান গত প্রায় এক দশক ধরে সপরিবারে ব্রিটেনে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, ব্রিটেনে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন।

তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কথাকে রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর বলে বর্ণনা করে মওদুদ আহমেদ বলেন, এই ইস্যুতে আওয়ামী লীগ মোটেই আন্তরিক নয়। তারা যতদিন সম্ভব একে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়।

‘তারা গত ১০ বছর ধরেই তো বলছে তাকে ফেরত আনবে। কিন্তু পেরেছে কি?’ বলছেন তিনি, ‘আর না পারলে, তারা কি বলতে পারছে কেন তারা পারছে না?’

যাবজ্জীবন রায়ে জীবনের ঝুঁকি না থাকায় তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেয়া সরকারর জন্য সহজ হবে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে ব্রিটেন তার আইনগত বাধ্যবাধকতার বাইরে যেতে পারে না। ‘সাত বছর, ১০ বছর কিংবা যাবজ্জীবন সাজা - যাই হোক না কেন তারেক রহমান যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, এটা তো সবারই জানা।’

শেয়ার করুন: