তারেক রহমান
তারেক রহমান

কী পরিণতি হবে তারেক, বিএনপির?

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামালা মামলার পর বিএনপি এবং তারেক জিয়া ভবিষ্যৎ কী হবে? এই রায়ের পর কি বিএনপি একটি ‘সন্ত্রাসী’ দল হিসেবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ভাবে চিহ্নিত হবে? আদালতের রায়ে কি দোষী সাব্যস্ত হবেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া? দোষী হলে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হতে পারে?

এই রায়ে দোষী হলে কি বিএনপির নেতৃত্বে থাকবেন তারেক? এই সব অসংখ্য প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে। আগামীকাল বুধবার, ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার তারিখ। নির্বাচন, আন্দোলন এই সব কিছু ছাপিয়ে রাজনীতির কেন্দ্রে এখন গ্রেনেড হামলা মামলার রায়।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটেছিল ২০০৪ সালে। সেসময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি জামাত জোট সরকার। দীর্ঘ ১০ বছর অপেক্ষার পর এই মামলার রায় হচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে রায়ের আগে একাধিক সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। গত ৮ অক্টোবর আইনজীবীদের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলন করেন। ঐ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন যে, সরকারি ইচ্ছের রায়ে হয়তো তারেক জিয়াকে দণ্ড দেওয়া হবে। একই আশঙ্কা করে আজ (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এই রায় নিয়ে আগাম কোনো মন্তব্য করেননি কোনো আওয়ামী লীগ নেতাই। ২১ আগস্ট মামলার দুরকম রায় হতে পারে। প্রথমত: সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার অভিযোগ থেকে খালাস পেতে পারেন তারেক জিয়া, লুৎফুজ্জামান বাবর। দ্বিতীয়ত, তাঁরা দোষী প্রমাণিত হতে পারেন।

যদি, আদালতের রায়ে তাঁরা দোষী প্রমাণিত হন। বিশেষ করে তারেক জিয়া তাহলে তাঁর কি সাজা হতে পারে? যে আইনে এই মামলায় তারেক অভিযুক্ত সেই আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিরা যুক্তিতর্কে প্রধান আসামি তারেক জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।

মৃত্যুদণ্ড দাবি করা হয়েছে, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ক্ষেত্রেও। একজন বিচারক সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী বা নির্দোষ নির্ণয় করেন। বিচারক কি রায় দেবেন, সেটা জানার অপেক্ষায় গোটা জাতি। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হলো, দল হিসেবে বিএনপির দায়। রাষ্ট্রপক্ষ তাঁর যুক্তিতর্কে, এই গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস বলে দাবি করেছেন। এটির পরিকল্পনা এবং ঘটনার পর তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল বলে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করেছে।

তাই এই রায়ে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিচারকের কোনো বক্তব্য আসে কিনা সেটিও দেখার বিষয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মামলায়, ট্রাইব্যুনাল দল হিসেবে জামাতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। ট্রাইব্যুনালের অন্তত দু’টি মামলায় ‘জামাত’ যুদ্ধাপরাধে যুক্ত বলে অভিমত দিয়েছিল। জামাত নিষিদ্ধের পক্ষেও মত দিয়েছিল।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার রায়েও কি তেমন কিছু থাকবে? বাংলাদেশে যখন যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলো, তখন বেশির ভাগ মানুষ এটাকে ‘অসম্ভব’ মনে করতো। এরকম মানুষের সংখ্যা খুব কম ছিল, যাঁরা বিশ্বাস করতো সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মতো ক্ষমতাবান যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাস্তবে সাকা চৌধুরীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। গ্রেনেড হামলা মামলার রায় যাই হোক তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ঘটাবে।

শেয়ার করুন: