মেসি

গোল করেই যে কারণে আকাশে তাকান মেসি!

ভালোবেসে অনেকে তাকে ভীনগ্রহের খেলোয়াড় বলেন। আর কেনই বা বলবেন না! সুকৌশল ফুটবল পাসিং এবং প্রায় অসম্ভব ও দুর্দান্ত কিছু গোল তাকে এনে দিয়েছে এই তকমা। তামাম বিশ্ব যে নামটির সাথে আনন্দে ভাসে তিনি আর কেউ নন, আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি। মাত্র ১১ বছর বয়সে হরমোন ডেফিসিয়েন্সি ধরা পরে চমকপ্রদ ফয়োয়ার্ড খেলোয়াড়ের। অথচ সেই হরমোন ডেফিসিয়েন্সিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আজকের ফুটবল বিশ্বকে কাঁপাচ্ছেন খুব আরামের সাথে। ত্রিশ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় কৈশোর জীবনেই বার্সেলোনার সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।

অসাধারণ ফুটবল খেলার দক্ষতা দিয়েই নিজের ক্যারিয়ার জীবনে অর্জন করেছেন পাঁচটি ব্যালন ডি’অর অ্যাওয়ার্ড এবং অধিকারী হয়েছেন পাঁচটি ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটের। হয়েছেন বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ফুটবল খেলোয়াড়। তার মূল্য ১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রিয় এই তারকা খেলোয়াড় সম্পর্কে কম কিংবা বেশি অনেক তথ্যই জানেন তার ভক্তরা। তবে আজকের ফিচারে তুলে ধরা হলো এমন পাঁচটি তথ্য যা একেবারেই নতুন ও অপ্রচলিত।

১. মেসির সাথে বার্সেলনার প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সামান্য একটি ন্যাপকিন কাপড়ে! তেরো বছর বয়সী মেসির মাত্র সাত মিনিটের ট্রায়াল দেখেই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন বার্সেলনার তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারি চার্লি রেক্সাস। মুগ্ধতার মাত্রা এতোটাই বেশী ছিল যে, তখনই বার্সেলনার সাথে মেসিকে চুক্তিবদ্ধ করার জন্য একটি ন্যাপকিন পেপারে চুক্তিপত্র তৈরি করেন তিনি। সেখানে উভয় পক্ষের স্বাক্ষর গ্রহণের মাধ্যমে মেসিকে বার্সেলোনার জন্য চুক্তিবদ্ধ করে নেন চার্লি। এমন প্রতিভাবান কিশোরকে এক মুহূর্তের জন্যেও হাতছাড়া করতে চাননি তিনি।

২. নিজের দেশের পক্ষে বিকল্প খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক ম্যাচে মাঠে নামার পর মাত্র ৪৪ সেকেন্ডের মাথায় মেসিকে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। মোটেও ভুল পড়েননি আপনি! মাত্র ৪৪ সেকেন্ডের মাথাতেই লাল কার্ড খেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। হাঙ্গেরির বিপক্ষে ৬৩ মিনিটে মাঠে নামানো হয় আঠারো বছর বয়সি মেসিকে। তবে প্রতিপক্ষ ভিলমস ভেঞ্জাককে কনুই দিয়ে গুঁতা দেওয়ার অভিযোগে লাল কার্ড হজম করতে হয় তাকে।

৩. প্রতিটি খেলোয়াড়ের গোল উদযাপনের ধরণ হয় ভিন্ন। গোলপোস্টের পাশ দিয়ে দৌড়ে, লাফিয়ে, জার্সি খুলে, সতীর্থদের সাথে নেচে নিজের গোল উদযাপন করেন খেলোয়াড়রা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে মেসির গোল উদযাপনের ধরণটা খুবই অন্যরকম। শান্ত ও ধীর। ক্ষিপ্রতা ও দ্রুততার সাথে গোলপোস্টে বলটা প্রবেশ করার পর খুব চুপচাপ, মেসি চুপচাপভাবেই নিজের গোল উদযাপন করেন। দুই হাতের তর্জনি উপরের দিকে তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে মেসিকে তার গোল উদযাপন করতে দেখা যায় প্রায় সবসময়। কিন্তু কেন এইভাবে নিজের গোল উদযাপন করেন সেটা জানা আছে কী?
তার গোল উদযাপনের ভঙ্গিমাটি হলো, নিজের প্রয়াত দাদীর প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ। মাত্র দশ বছর বয়সে নিজের ভীষণ ভালোবাসার মানুষটিকে হারান মেসি। যার প্রতি ভালোবাসা একবিন্দু কমেনি তার। হারানো দাদীর প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার নিদর্শন স্বরূপ নিজের পরিশ্রমের প্রতিটি গোল তিনি উদযাপন করেন আকাশের দিকে তাকিয়ে।

৪. চুপচাপ ও লাজুক স্বভাবের মেসি গান শুনতে কিন্তু দারুণ পছন্দ করেন। তবে তার দুইটি ভিন্ন ধারার গানের প্রতি আকর্ষণটা তুলনামূলক বেশি। সাম্বা ও কাম্বি তথা কাম্বিয়া (কলম্বিয়ান নৃত্যভিত্তিক গান) গান শুনতে ভালোবাসেন মেসি।

৫. পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতার ফরোয়ার্ড খেলোয়াড় মেসিকে ইতিহাসের সবচেয়ে খাটো ফরোয়ার্ড খেলোয়াড় হিসেবে ধরা হয়। স্বাভাবিকভাবে অবশ্য মেসির উচ্চতা নেহায়েত কম নয়। এই উচ্চতাটুকু নিয়েই মাঠ কাঁপাচ্ছেন তিনি।

শেয়ার করুন: