প্রায় ১১ মাস পর আবারও রাজধানীতে বড় ধরণের জনসভা করতে যাচ্ছে বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করার পর এই প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা। বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার, সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবিতে বিএনপির আজকের জনসভা।
আজ (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হবে জনসভাটি। সরকারের শেষ সময়ে দাবি আদায়ে মাঠে নামার ঘোষণা দেয়ায় আজকের জনসভাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষকরা। আর গত ১ সেপ্টেম্বর ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশের পর সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশ নিয়ে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা। জনসভাটি সফল করার জন্য ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে বিএনপি। শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর)রাতেই প্রস্তুত করা হয়েছে সমাবেশের মঞ্চ।
অতীতের যে কোন জনসভার চেয়ে এই জনসভায় লোক সংখ্যা ও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বেশি করার জন্য ঢাকা ও এর আশপাশের জেলার নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একইসাথে আজকের জনসভা থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা ও যাত্রা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। এছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যে দাবিগুলো বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে উত্থাপন করা হয়েছে সেসব বিষয়ে একত্র করে উপস্থাপন করা হবে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, এই জনসভাকে স্মরণকালের সেরা সমাবেশে রূপদানের জন্য প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে বিএনপিসহ এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাজধানীসহ ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উপস্থিত হয়ে সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরের কয়েক হাজার মানুষ রাজধানীতে এসে উপস্থিতও হয়েছেন।
গতকাল রাত থেকেই সমাবেশ স্থলে উপস্থিত ছিলেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। সেখানে তারা সমাবেশের জন্য স্টেজ নির্মানসহ অন্যান্য প্রস্তুতি কাজে অংশগ্রহণ করেন এবং নিরাপত্তার জন্য নিজেদের উদ্যোগেই কাজ করেন। তাদের উপস্থিতি দেখে কেউ কেউ মন্তব্য করে ফেলেন, মূল সমাবেশের আগে রাতেই এতো মানুষের উপস্থিতিতে ছোট-খাটো সমাবেশও হয়ে গেছে। আজও সকাল থেকে আরও কয়েক লাখ মানুষের গন্তব্য থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
হাতে হাতে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হয়ে তারা সরকারের চলমান জুলুম-নির্যাতন, গুম-খুনসহ অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন। দাবি জানাবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। উপস্থিত হয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সমর্থন জানাবেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মুক্তি, নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে দলটির দাবির প্রতি।
কেবল বিএনপি নেতাকর্মীই নয়, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে এর মাধ্যমে বিএনপির জনপ্রিয়তা সম্পর্কে সরকারকে বার্তাও দিতে চায় দলটি। গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখে চাঙ্গা হয়ে ওঠে দলের নেতাকর্মীরা।
এরপর থেকেই বড় ধরণের জনসভা করার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে বিএনপি। তাই ২৭ সেপ্টেম্বর থেকেই জনসভা করার জন্য চেষ্টা করছে দলটি। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দুই দফা অনুমতি দেয়ার পরও তা পিছিয়ে সর্বশেষ আজকের দিনে ২২টি শর্তে অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে সমাবেশের ঘোষণা আসার পর থেকেই উজ্জীবিত ও চাঙ্গা নেতাকর্মীরা এবার ঢাকাকে জনসমুদ্রে পরিণত করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।