আবারও সুখবর পাচ্ছে নতুন সরকারি কলেজ শিক্ষকরা

ঘোষণার দিন থেকেই বেতন পাবেন নতুন করে সরকারি হওয়া কলেজের শিক্ষকরা। আত্তীকরণের পর সরকারি শিক্ষক হিসেবে তারা আগের পাওনাও বুঝে পাবেন।

তবে এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) সুবিধার আওতায় আগের উত্তোলিত অর্থের সঙ্গে সরকারি শিক্ষক হিসেবে প্রাপ্ত বেতনের সমন্বয় করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে দেশের প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি করে স্কুল এবং একটি করে কলেজ সরকারি করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দেশে এ পর্যন্ত ৫৯৯টি কলেজ সরকারি করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি ঘোষণার পর নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি করার কাজ সম্পন্ন হবে। এরপর ২০১৮ সালের আত্তীকরণ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রক্রিয়া মেনে কলেজ শিক্ষকদের আত্তীকরণ করা হবে। এরপর শিক্ষকরা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং সরকারি শিক্ষক হিসেবে তারা বেতন উত্তোলন করবেন।

নিয়ম অনুযায়ী, আত্তীকরণ পর্যন্ত যে বেতন-ভাতা উঠিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা, সেই পরিমাণ অর্থ ফেরত দিয়ে সরকারি শিক্ষক হিসেবে ধার্য বেতন গ্রহণ করবেন। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা যে বেতন আগে উত্তোলন করেছেন, তার সঙ্গে সমন্বয় করে শিক্ষকদের বেতন ওঠাতে হবে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কর্মকর্তারা।

২০১৮ সালের আত্তীকরণ বিধিমালার ৯ ধারা অনুযায়ী, ‘অস্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা সংশ্লিষ্ট কলেজ সরকারিকরণের তারিখ থেকে বিদ্যমান জাতীয় বেতন স্কেলের সংশ্লিষ্ট গ্রেডের প্রারম্ভিক ধাপে স্ব স্ব পদের বেতন-ভাতাদি প্রাপ্য হবেন।’

অর্থাৎ আত্তীকৃত কলেজ শিক্ষকরা নন-ক্যাডার হিসেবে নবম গ্রেডে বেতন পাবেন।এই বিধিমালার আওতায় কলেজের শিক্ষকদের সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডারভুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে।

নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের আত্তীকরণ ও বেতন উত্তোলন সংক্রান্ত বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক (কলেজ ) ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘নিয়োগ পাওয়ার দিন থেকেই শিক্ষকরা বেতন পাবেন। যখন তাদের আত্তীকরণ করা হবে, তখন এমপিও থেকে উত্তোলিত টাকা ফেরত দিয়ে গ্রেড অনুযায়ী বেতন-ভাতা উত্তোলন করবেন, বকেয়া টাকাসহ।’

বিধিমালা অনুযায়ী– প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকলে বেসরকারি কলেজের যেকোনও শিক্ষক শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে পিএসসির অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। পিএসসির সুপারিশ পেলে তাকে শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।

আর ক্যাডারভুক্তি শিক্ষকরা বিভিন্ন সরকারি কলেজ ও দফতরে বদলিও হতে পারবেন। এছাড়া এই বিধিমালার আওতায় কলেজের শিক্ষকদের সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডারভুক্তির সুযোগ রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, সরকারি হওয়া কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নন-ক্যাডার হিসেবে নিজ নিজ পদে নিয়োগ পাবেন। তাদের চাকরি আর বদলিযোগ্য হবে না। যেসব শিক্ষকরা পিএসসির পরীক্ষায় অংশ নেবেন না তাদের নন-ক্যাডার হিসেবে আত্তীকরণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, যেসব জেলা ও উপজেলায় সরকারি স্কুল ও কলেজ নেই, সেসব জেলা ও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতি ও সম্মতি পাওয়া কলেজগুলো পর্যায়ক্রমে সরকারি করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন: