সিস্টার মারিয়া ক্রসিফিস্সা দেল্লা কনসিজিওন নামে এক নারীর ওপর শয়তান ভর করে। রাতভর তিনি অদ্ভুত ভাষায় চিঠি লিখতে থাকে। লেখায় এমন অক্ষর তিনি ব্যবহার করেন যা তিনি নিজেই জানতেন না।
১৬৭৬ সালের ইতালির সিসিলি অঞ্চলের পালমা দি মন্টেকিয়ারো কনভেন্টে এ ঘটনা ঘটেছিল। ও সময় এক সকালে মারিয়া ঘুম থেকে ওঠে সারা গায়ে কালি মাখা অবস্থায়। সারা রাত সে আবিষ্ট অবস্থায় চিঠি লিখে গিয়েছে।
মারিয়া ১৫ বছর বয়স থেকে এই কনভেন্টের বাসিন্দা। তার আচরণে আগে কখনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায়নি। কিন্তু সেই দিন তাকে বার বার অস্বাভাবিক চিৎকার করতে দেখা গিয়েছিল।
কনভেন্টের রেকর্ড থেকে জানা যায়, মারিয়া পরে বলে, এই সব চিঠি তাকে দিয়ে লিখিয়েছে স্বয়ং শয়তান। শয়তান পৃথিবী থেকে সৃষ্টিকর্তার রাজত্ব ঘুচিয়ে তার নিজের শাসন কায়েম করতে তাকে ব্যবহার করছে।
মারিয়া যেসব ‘চিঠি’ লিখেছিল, সেগুলি কোনও চেনা হরফে রচিত নয়। সম্পূর্ণ অপরিচিত হরফে রচিত এই চিঠিগুলি কেউ পাঠোদ্ধার করতে পারেনি সেই সময়ে।
সময়ের আবর্তে বেশ কিছু চিঠি হারিয়ে যায়। কিন্তু একটি থেকে যায় কনভেন্টের সংগ্রহে। সম্প্রতি সেই চিঠি পাঠোদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে ইতালির লুডাম সায়েন্স সেন্টার।
লুডাম সায়েন্স সেন্টারের ডিরেক্টর ড্যানিয়েল অ্যাবেট জানিয়েছেন, ডার্ক ওয়েব থেকে প্রাপ্ত একটি সফটওয়্যারের সাহায্যেই এই চিঠি পড়া সম্ভব হয়েছে। অ্যাবেটের মতে, গুপ্তচর সংস্থাগুলি এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে আধুনিক সময়ের গুপ্ত সংকেতের পাঠোদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, এই ‘শয়তানের চিঠি’টি রচিত হয়েছিল প্রাচীন গ্রিক, আরবি, লাতিন এবং প্রাচীন জার্মান হরফ রুন মিশিয়ে। পাঠোদ্ধারের পরে এই চিঠির সারমর্ম যা উদ্ধার হয়, তা প্রকৃত অর্থেই ‘পৈশাচিক’।
অ্যাবেট জানিয়েছেন, এই চিঠিতে ঈশ্বর, যিশু এবং পবিত্র আত্মার নিন্দা করে হয়। বলা হয়, ঈশ্বর মনে করেন, তিনি মানবের মুক্তিদাতা। কিন্তু তাঁর ‘সিস্টেম’ আদৌ কাজ করে না। এই চিঠিতে এমন কথাও রেয়েছে যে, ঈশ্বর মানুষেরই কল্পনা-প্রসূত।