সদ্য সমাপ্ত বিএনপি ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতা-কর্মীদের সামনে নতুন কোনো ভিশন উপস্থাপন করতে না পারায় তারেক রহমানের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। ঘুরে ফিরে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়ে অযথা হুংকার না দেওয়ার জন্য তার উপর ক্ষিপ্ত হন তারেক।
এছাড়া শুধু সরকারকে দায়ী করে মিথ্যাচার ছড়ানো এবং নেতা-কর্মীদের সঠিক দিকে নির্দেশনা না দেওয়ার জন্য মির্জা ফখরুলের উপর চরম বিরক্ত হন তারেক। বক্তব্য দেওয়ার নামে নেতা-কর্মীদের বিভক্ত করার অপরাধে মির্জা ফখরুলকে একহাত নিয়েছেন তারেক। তারেক রহমানের গালি খেয়ে স্তব্ধ ও নির্বাক হয়ে পড়েছেন মির্জা ফখরুল। জানা গেছে, দলের জন্য নিবেদিত হয়েও সমালোচনার শিকার হওয়ায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মির্জা ফখরুল।
লন্ডন বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত জনসভায় নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে কর্মীদের দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য মির্জা ফখরুলকে আদেশ দিয়েছিলেন তারেক। নির্দেশনার মধ্যে অন্যতম ছিল, খালেদা জিয়ার মুক্তি বিষয়ে কোনরকম বক্তব্য দিয়ে কর্মীদের উজ্জিবিত না করা, দলীয় কোন্দাল দূর করে এক নেতার আদেশ পালন করা, সরকারের কাছে নিজেদের অক্ষমতা না প্রকাশ করা, সরকার পতনের আন্দোলনের ডাক দিয়ে সরকারের সাথে সমঝোতার আভাস দেওয়া।
কিন্তু অনেক দিন পর হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের চোখের সামনে দেখে অতিউৎসাহী হয়ে তারেক রহমানের আদেশ অমান্য করে আন্দোলনের নামে রক্ত ঝরানো, আওয়ামী লীগকে প্রতিরোধ করার মতো বানী দিয়ে কর্মীদের সামনে হিরো সাজেন ফখরুল।
অন্যান্য সময়ে নরম সুরে প্রেস ব্রিফিং করে সরকারের বদনাম করাটা নিয়তি ছিল মির্জা ফখরুলের। এর মধ্যে আবার প্রেস ব্রিফিং নিয়ে রিজভীর সাথে মির্জা ফখরুলের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দেখেছে কর্মীরা। তাই সব মিলিয়ে মির্জা ফখরুলের পাটবনের বাঘ সাজা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। এদিকে দলীয় প্রধানের আদেশ অমান্য করায় সভা শেষে রিজভী আহমেদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন মির্জা ফখরুল।
রিজভী তার দুঃসাহসে বিস্মিত হয়ে কথায় লাগাম দেওয়ার বিষয়ে বললেই মির্জা ফখরুল তাকে তারেক রহমানের খাস চামচা বলে উপহাস করেন। কথায় কথায় তারেক রহমানকে নালিশ করার জন্য রিজভীকে ভর্ৎসনা করেন মির্জা ফখরুল। ঘটনার পর পরই রিজভী আহমেদ গোপনে তারেক রহমানকে ফোন করে বিচার দেওয়ার পর লন্ডন থেকে তারেক মির্জা ফখরুলকে তার নির্দেশ অমান্য করার জন্য জবাবদিহিতা করতে বলেন।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার বরাতে জানা যায়, মির্জা ফখরুল অতিউৎসাহী হয়ে ভুল করেছেন স্বীকার করা মাত্রই তারেক তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। তার নির্দেশনা না মানার জন্য দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারেক। এছাড়া রিজভী আহমেদের কাছে ক্ষমা চেয়ে গৃহপালিত নেতা হওয়ার জন্য আদেশ দেন তারেক।
পরবর্তী সব কাজ রিজভী আহমেদের সাথে পরামর্শ করে করারও আদেশ দেন তারেক। পুরো সমাবেশ ব্যর্থ হয়েছে এবং এর জন্য তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে তিরষ্কার করেন তারেক।
এসময় তারেক বলেন, আপনাকে দিয়ে দল চলবে না। আপনার বয়স হয়েছে। এবার অবসরে যান। গ্রামের বাড়ি ফিরে গিয়ে মসজিদে মোয়াজ্জিনগিরী করেন। আপনার জ্ঞান বোঝা শেষ। আপনি সরকারের চামচা। তারেক রহমানের তীব্র গালমন্দের পর মুখ কালো করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মির্জা ফখরুল। এসময় রিজভী আহমেদ হাত তুলে আল্লাহকে শুকরিয়া আদায় করেন। রিজভীর মুখে হাসি দেখে উপস্থিত সেই নেতা অবাক হয়ে যান।